‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়’
৯ নভেম্বর ২০১৯ ২১:১৯
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর আঘাতে নদী ভাঙন কিংবা কোনো বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেন, গত দুদিন ধরে বিপৎসীমার মধ্যে থাকা সব উপকূলীয় জেলায় সর্বক্ষণ মনিটরিং চলছে।
শনিবার ( ৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিং এ তথ্য জানান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর বোঝা যাবে ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা কোন পর্যায়ে দাঁড়ায়। উপকূলীয় জেলাগুলোর সকল কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রস্তুত থাকার জন্য। যাতে মানুষের জানমাল সম্পদের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হয়।’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত দুদিন ধরে মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিয়েছে। বিভিন্ন জোনে প্রধান নির্বাহী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে বলা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় যে সব নদী ভাঙন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেসব এলাকার উপজেলা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মোবাইলে সব সময় যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে; যাতে তাৎক্ষণিকভাবে কোন নদী ভাঙনের সংবাদ এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’
এদিকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়েও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সে প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডেও কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। কোথাও সমস্যা হলে কর্মকর্তাদের কন্ট্রোল রুমে মেসেজ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাতে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রমকালে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর,বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেসময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫থেকে ৭ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।’
এ সময় উপস্থিত উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় আছে এবং থাকবে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর কী ক্ষতি হয় সেগুলো পুনর্বাসনসহ সব ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত থাকব।’
উল্লেখ্য, ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর জন্য মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।