Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুই দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করলো জাবির আন্দোলনকারীরা


১০ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৪

বৈরি আবহাওয়ার কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত আটটায় সংবাদ সম্মেলন শেষে আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রায়হান রাইন আগামী দুই দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দেন।

রায়হান রাইন বলেন, জাতীয় দুর্যোগের কারণে আগামীকাল এবং পরশুদিন আমাদের কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। জাতীয় দুর্যোগে জাতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করছি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে তদন্ত চলাকালে উপাচার্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা কিংবা কিছু দিনের জন্য ছুটিতে পাঠানোর দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা কিংবা কিছু দিনের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয় এটাই নিয়ম। কারণ অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রভাবশালী হন তাহলে তিনি তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। সে জায়গা থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, সেহেতু নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো যেতে পারে। তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলে আবার স্বসম্মানে স্বপদে ফিরে আসবেন।

এর আগে আজ শনিবার উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হল বন্ধ করে ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলন চলছে।

শনিবার বিকাল সাড়ে চারটায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সমানে থেকে প্রতিবাদী উক্তি ও চিত্র অঙ্কিত ৬০ গজ দীর্ঘ কাপড়ের ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ শেষে প্রধান ফটকে কিছুক্ষণ অবস্থান করে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলন শুরু হওয়ার কারণ ও এর উদ্দেশ্য বর্ণনা করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছিলো মেগা প্রজেক্টে অপরিকল্পনা নিয়ে। এর মধ্যে গণমাধ্যমে উপাচার্যের দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলে আমরা তার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছিলাম। কিন্তু উপাচার্য আমাদের দাবিকে আমলে নেননি। তদন্তের ব্যাপারে তার গড়িমসিই আমাদের বাধ্য করেছে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে নামতে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলাম। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে উপাচার্য ছাত্রলীগের মাধ্যমে হামলা করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে এসেছেন।

এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ‘কনসার্টের অর্থ কোত্থেকে আসে’ প্রশ্নের জবাবে পাপ্পু বলেন, ‘আমরা এমন কোনো কর্মসূচি দেইনি যাতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। কনসার্টের জন্য কোনো সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়নি। গায়করা হ্যান্ড মাইকে গান গেয়েছেন। আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে গান গাওয়ায় এর জন্য তারা কোনো পারিশ্রমিকও নেননি।’

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ব্যাপারে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন আমরা তা ইতিবাচকভাবে দেখছি। তাদের যে বক্তব্য আমরাও সেকথাই বলে আসছি। এখানে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষ অভিযোগ উত্থাপন করেছে। আরেক পক্ষ অভিযুক্ত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যেকোনো এক পক্ষকে তো অবশ্যই দায় নিতে হবে। অভিযুক্তদের এক পক্ষ স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছে যাকে অপরপক্ষ বলছে বানানো স্বীকারোক্তি বা কারসাজি। এতে যা হয়েছে তাহলো জাহাঙ্গীরনগরের সম্মান নষ্ট হয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা চাই যে পক্ষই দোষী হোক, একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হোক এবং দোষীরা শাস্তি পাক।’

সংবাদ সম্মেলন শেষে অধ্যাপক রায়হান রাইন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান,  আগামী মঙ্গলবার থেকে যথারীতি আমাদের কর্মসূচি শুরু হবে। ১১ টায় পটচিত্র প্রদর্শনী, বিকাল ৩ টায় সংহতি সমাবেশ, সন্ধ্যা ৬ টায় গানে গানে সংহতি নামে একটি অনুষ্ঠান হবে।

আন্দোলন জাবি জাহাঙ্গীরনগর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর