‘বুলবুল’ প্রলয়ে দেড় লক্ষাধিক মানুষ ঘরছাড়া
১০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। হাওয়া ঘূর্ণির এই প্রলয় লীলা থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ঘর ছেড়েছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ। তবে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে ভারতের এই রাজ্যের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও একজন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ ও সাগরদ্বীপ হয়ে স্থলভাগে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। ফলে বহু বাড়িঘর, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ও অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এখন কিছুটা দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছে। উত্তরপূর্ব দিকে ক্রমশ দুর্বল হয়ে মধ্যরাত নাগাদ এটি খুলনা উপকূল অতিক্রম করে যেতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের উপ-পরিচালক আয়শা খাতুন শনিবার রাত ১১টায় জানিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিমি এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিমি। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আয়শা খাতুন জানান, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরপূর্ব দিকে আট কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে।
এদিকে অতি প্রবল অবস্থা থেকে শক্তি কমিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে বুলবুল। তবে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর এখনো প্রবলভাবে বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের জন্য মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল অতিক্রমের সময় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।