সমস্যায় জর্জরিত চুয়াডাঙ্গা বক্ষব্যাধি ক্লিনিক
১১ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:১৪
চুয়াডাঙ্গা: যক্ষ্মা নির্মূলে চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র বক্ষব্যাধি ক্লিনিকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সেখানে নেই কোনো কনসালট্যান্ট। শূন্য রয়েছে আরও অন্তত ১৪টি পদ। ক্লিনিকের অনেক যন্ত্রপাতিও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পেতে অসুবিধায় পড়ছেন স্থানীয়রা।
জেলার বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের অফিস সহকারী হাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ক্লিনিকটিতে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। তবে আড়াই বছর ধরে নেই কোনো কনসালট্যান্ট। ২০১১ সাল থেকে এই ক্লিনিকের এক্সরে মেশিন নষ্ট রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। তবে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক বর্তমানে ক্লিনিকটিকে এক্সরে সুবিধা দিচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা ব্র্যাকের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, যক্ষ্মা নির্মূলে ব্র্যাক মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের এক্সরে মেশিন খারাপ থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা পুরুষ-নারীদের বিনামূল্যে এক্সরে সুবিধা দিচ্ছে ব্র্যাক। এক্সরে করার পর সেটা ঢাকায় পাঠানো হয়, সেখান থেকে এক্সরে দেখে তারা রিপোর্ট পাঠায়।
জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ জনের দেহে যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া যায়। চিকিৎসা চলাকালীন প্রতিটি গ্রামে কর্মীদের মাধ্যমে ওষুধ চলে যায়। তবে এখানে পাঁচ হাজার মানুষের জন্য রয়েছেন একজন সেবিকা। রোগী নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছে কি না, তা তদারকির দায়িত্ব থাকে তার ওপর। একজনের পক্ষে এই তদারকি কঠিন। তা সত্ত্বেও শতকরা ৯৬ ভাগ যক্ষ্মা রোগী চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়েছেন বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার এই বক্ষব্যাধি ক্লিনিকটিতে একজন অফিস সহকারী, একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, চার জন অফিস সহায়ক, দুই জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী (একজন সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন), একজন রেডিওগ্রাফার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন সহকারী নার্স, একজন গাড়িচালক ও দুই জন লেডি হোম ভিজিটরের পদ শূন্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০০৪ সাল থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সরকারের সহযোগী সংস্থা হিসাবে কাজ করছে ব্র্যাক। বক্ষব্যাধি ক্লিনিকেও মূলত তারাই সেবা দিয়ে আসছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৩৩ জন সেখানে কফ পরীক্ষা করেছে তারা। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৯৮ জনের শরীরে যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া গেছে। এছাড়া এক্সরে ও অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে ১ হাজার ৪৮৯ জন ফুসফুসে ও ১ হাজার ৯৬৪ জন ফুসফুস বহির্ভূত যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেছে তারা। এছাড়া ৪৩৭ জন পুনরায় আক্রান্ত যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেছে ব্র্যাক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য কনসালট্যান্টসহ অন্যান্য পদে জনবল সংকটের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া মেডিকেল অফিসার যেন সেখানে নিয়মিত রোগী দেখেন, সেই ব্যবস্থাও করা হবে।