‘আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে না’
১১ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:২১
সংসদ ভবন থেকে: সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া স্থগিত থাকার কারণে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয় না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গ্যাসের অপচয় রোধ ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিতে গৃহস্থালিতে প্রি-প্রেইড মিটার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।’
সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে দু’জন এমপির পৃথক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ওই কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী ওই সাংসদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে গ্যাস ঘাটতি পূরণ করা হচ্ছে। ফলে আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া স্থগিত রেখে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক খাতগুলোতে (শিল্প, সার ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে) অগ্রাধিকারভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় সরকারের রাজস্ব বেড়েছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ অথনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখছে।’
গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব‘র্তমান সরকারের মেয়াদে (২০০৯-১৯সাল) গৃহস্থালি, বিদ্যুৎ ও সার খাতে ৪ বার, শিল্প, ক্যাপটিব পাওয়ার, চা ও বাণিজ্যিক খাতে ৫ বার এবং সিএনজিখাতে গ্যাসের মূল্য ৬ বার বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বশেষ ১ জুলাই ২ বছর পর সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
মমতাজ বেগমের এক মৌখিক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে ও জ্বালানি ব্যবহার বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে দেশে আবিস্কৃত কয়লার উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা প্রণয়নসহ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
মহিবুল হক মানিকের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরের গ্যাস লাইন পুরনো এবং ৫০ বছরের। বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এলেও এসব লাইন সংস্কার করেনি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পুরো লাইনকে সংস্কারের জন্য ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শিগগিরই টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ পাবেন রাজধানীবাসী।’
বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎতের কোনো পাওয়ার (ওঠা-নামা) করে না। অথচ তিনি (প্রশ্নকর্তা) বলেছেন পাওয়ার উঠা-নামা করে। আমার মনে হয় ওনার এই অভিযোগটি ঠিক নেই। যদি সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট সাংসদের বাসায় সমস্যা থেকে হতে পারে। কারণ আজ সোমবার সংসদ অধিবেশনে প্রবেশ করার আগে আমি বিদ্যুতের যে উৎপাদন দেখেছি, তা চাহিদার চেয়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট বেশি।’
মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘বর্তমানে সরকারিখাতে উৎপাদিত প্রতিটি ১২.৫০ কেজির সিলিন্ডার ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ৭০০ টাকা মাত্র। বেসরকারি খাতে বটলিংকৃত প্রতিটি ১ কেজির সিলিন্ডার খুচরা পর্যায়ে সাড়ে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে নতুন মূসক আইন কার্যকর হওয়াতে এলপি গ্যাসে ভ্যাট খাতে খরচ বৃদ্ধি পেলেও জনস্বার্থে সরকারি খাতে উৎপাদিত সিলিন্ডারের খুচরা পর্যায়ে বিক্রয় মূল্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’
বেগম গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরের আমূল পরিবর্তন এবং দুর্ঘটনা রোধসহ নানা প্রতিকূলতা দূর করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ লাইন পর্যায়ক্রমে মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মেট্রো এলাকায় কিছু কিছু স্থানের বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’ পর্যায়ক্রমে সব মেট্টো এলাকায় এই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।