কনডেম সেলে যাচ্ছে নুসরাত হত্যা মামলার আসামিরা
১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:১৬
ফেনী: ফেনী জেলা কারাগারে আলাদা কনডেম সেল ও ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ১৩ আসামিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। বাকী ৩ জনকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) পাঠানো হবে চট্টগ্রামে।
আসামিদের স্থানান্তরের এই বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা। ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোহাম্মদ রফিকুল কাদের জানান, ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৬ আসামির মধ্যে ১৪ জনকে কুমিল্লা ও দুই নারী আসামিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। এদের মধ্যে ১৩ জনকে আজ কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ১৩ নভেম্বর আদালতে মামলার দিন ধার্য আছে। এ জন্য আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে ওই দিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) নারী আসামি কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা ওরফে পপিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, যে সব আসামির দীর্ঘ মেয়াদি শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড হয়, তাদের জেলা কারাগারে না রেখে নিরাপত্তাজনিত কারণে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর জন্য কারাবিধিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে জনবল ও কনডেম সেলের সংখ্যা বেশি। তাদের পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সেখানে রয়েছে। ফেনী জেলা কারাগারে ফাঁসির কোন মঞ্চ নেই, সেখানে সব রয়েছে।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এ মামলার ২ হাজার ৩২৭ পাতার ডেথ রেফারেন্স বা মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ম অনুযায়ী লাল কাপড়ে মুড়িয়ে উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
২৪ অক্টোবর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যায় নুসরাত।