আবরার হত্যায় সরাসরি অংশ নেয় যে ১১ জন
১৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:৩৮
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র (বুয়েট) আবরার ফাহাদকে হত্যার আগে মারপিটে সরাসরি ১১ জন অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি মারপিটে অংশ নিয়েছে, তদন্তে নাম পাওয়া সেই ১১ জন হলো, বুয়েট ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের মেহেদী হাসান রাসেল, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৪তম ব্যাচের মুহতাসিম ফুয়াদ, ১৫ তম ব্যাচের অনীক সরকার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের মেহেদী হাসান রবিন, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ইফতি মোশারফ হোসেন সকাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইইই বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মো. জিসান, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শামীম বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের তানীম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শামসুল আরেফিন রাফাত ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মনতাসির আল জেমি।
আবরার হত্যা: ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা
ছাত্রদের উচ্ছৃঙ্খলতার চরম বহিঃপ্রকাশ আবরার হত্যাকাণ্ড
মারপিটে সরাসরি অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকী তিনজনের মধ্যে মেহেদী হাসান রাসেল জবানবন্দি দেয়নি। আর বাকী দুইজন (জিসান ও তানিম) পলাতক রয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ১১ জন সরাসরি অংশ নিলেও বাকী ১৪ জন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোনো না কোনো উপায়ে হত্যায় সহায়তা করেছে। ফলে তাদের নাম যথোপযুক্ত প্রমাণ সহকারে অভিযোগপত্রে আনা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম জানান, গত ৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে আবরার ফাহাদকে শায়েস্তা করতে শিবির আখ্যায়িত করে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ১০টা থেকে শেরেবাংলা নগর হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে মারপিট করে। সেখান থেকে ২০০৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবার তাকে মারপিট করা হয়। এরপর রাত ২টা ৫০ মিনিটের দিকে চিকিৎসক ডাকা হলে তিনি আবরারকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা চকবাজার থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে মোট ২৫ জনের জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। এর মধ্যে এজাহারে থাকা ১৯ জন ছাড়াও ৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এজাহারে থাকা ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকী তিনজন (জিসান, তানিম ও মোরশেদ) পলাতক রয়েছে। এছাড়া এজাহার বহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জন গ্রেফতার হলেও একজন (মুজতবা রাফিত) পলাতক রয়েছে।
এছাড়া মামলার অভিযোগপত্রে ৩১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সাক্ষী করা হয়েছে, শেরেবাংলা হলের ক্যান্টিন বয়, মৃত ঘোষণাকারী চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড, আবরারকে হাসপাতালে যারা নিয়ে গেছেন তারা, হল প্রভোষ্ট এবং হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।