Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমি স্পোর্টস পরিবারের মেয়ে, খেলাধুলাকে সবসময়ই প্রাধান্য দেই


১৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:৫৭

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে হলে শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না, সাথে খেলাধুলাসহ মেধা মনন বিকাশের জন্য তাদের সুযোগ করে দিতে হবে। এতে শারীরিক ও মানসিক সবদিক থেকেই তাদের ভিতর আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। সেই সব বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রেখেই স্পোর্টসকে সবসময় গুরুত্ব দেই, কারণ আমি নিজেই তো একটা স্পোর্টস পরিবারের মেয়ে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে গণভবনে ‘শেখ রাসেল ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব কাপ টেনিস টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৮টি দেশের ২০টি ক্লাব থেকে ৬৪ জন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছে এ আসরে। যার মধ্যে ১০ জন নারী। ইতোমধ্যে ১১টি দেশের খেলোয়াড় খুলনায় এসে পৌঁছেছেন।
অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে আছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মঙ্গোলিয়া, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুন, ইতালি, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, গ্রেট ব্রিটেন, তিউনেশিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, পাকিস্তান, ভুটান, ভারত, ইরাক ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।

খেলাগুলো শেখ রাসেল ইন্টারন্যাশনাল টেনিস গ্রাউন্ড, অফিসার্স ক্লাব, খুলনা ক্লাব, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা ডিআইজি টেনিস গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ভেন্যু হিসেবে জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট টেনিস গ্রাউন্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পুরুষ একক, পুরুষ দ্বৈত ও নারী একক এই তিন বিভাগে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় রেফারিগণ খেলা পরিচালনা করবেন।

প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার প্রতি তার সরকারের গুরুত্বারোপ করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি, এই স্বাধীন দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য একদিকে যেমন মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হবে পাশাপাশি খেলাধুলা সাংস্কৃতিক চর্চাকেও বিশেষভাবে যত্মবান হতে হবে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের দেশের মানুষকে উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার সাথে খেলাধুলার দিকেও নজর দিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে দেখেছি, তাদের একটু ভালো সহযোগিতা দিলে তারা খুব কাজ করতে পারে। খেলাধুলায় তারা সারাবিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।’ তাই দেশে যাতে বহুমুখী লেখাধুলার পরিচর্যা হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

দেশের ছেলেমেয়েকে উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে যদি আমরা গড়ে তুলতে চাই তাহলে শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না সাথে তাদের খেলাধুলা সংস্কৃতি চর্চা, মেধা মনন বিকাশের সুযোগ সেটাও করে দিতে হবে।’

সে লক্ষ্যে খেলাধুলার জন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘এতে শারীরিক দিক থেকে তারা সুস্থ থাকবে তা নয়। তারা শারীরিক এবং মানসিক সবদিক থেকেই তাদের ভিতর একটা আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। তাদের ভিতরে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে। দেশ ও জাতির প্রতি একটা কর্তব্যবোধ জাগ্রত হবে। সেই সব বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রেখেই স্পোর্টসকে সবসময় গুরুত্ব দেই। আর তাছাড়া আমি নিজেই তো একটা স্পোর্টস পরিবারের মেয়ে, সেই কথাটা সকলেই আপনারা জানেন।’

এ লক্ষ্যে সরকার খেলাধুলার দিকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ আমার দাদা নিজে ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন। আমার বাবাও ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন। আমার ভাই কামাল-জামাল তারাও খেলত। তারা ফুটবল, হকিসহ বিভিন্ন খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সেই সঙ্গে আমাদের যে দুই পুত্রবধু কামালের স্ত্রী সে ইউনিভার্সিটির ব্লু ছিল স্পোর্টসে। জামালের স্ত্রী সেও খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।’

‘আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষ বিশেষ করে যুবসমাজ, তরুণ, শিশু-কিশোর বয়স থেকে এই খেলাধুলার প্রতি আরও মনোনিবেশ করবে। যা তাদের চরিত্র গঠনে সহায়ক হবে। দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী করবে, আত্মবিশ্বাসী করবে এবং দেশকে উপযুক্তভাবে তারা গড়ে তুলতে পারবে।’

জাতির পিতার স্বপ্নের গড়ার প্রত্যয় পূর্নব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন উপযুক্ত নাগরিক গড়ে তোলা। আর এই নাগরিক গড়ে তুলতে গেলে, আমাদের দেশে শিশু বয়স থেকেই ছেলেমেয়েদেরকে শিক্ষা-দীক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলায়, তাদের মেধা মননে বিকশিত হওয়ার সব ধরনের সুযোগ দেশে সৃষ্টি করতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদক; এই সব কিছুর হাত থেকে আমাদের তরুণ সমাজকে দূরে রাখতে হবে। এটা করতে গেলে আমরা যতবেশি তাদের খেলাধুলায় এবং সংস্কৃতি চর্চার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যত বেশি সম্পৃক্ত করতে পারব, ততবেশি তারা এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকবে। তারা নিজেদের চরিত্র গঠনে সচেষ্ট হবে এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। আগামী দিনে বাংলাদেশকে গড়ে তুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।

টুর্নামেন্টের সফলতা কামনা করে খুলনায় সরাসরি উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করতে না পারার আপসোস করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন আমার খুব মনে হচ্ছে খুব ভুল করেছি। আমার নিজের খুলনায় যাওয়া উচিত ছিল। এই প্রথম খুলনায় একটা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হচ্ছে। আর যেতে পারলাম না, সত্যি খুব দুঃখ লাগছে।

গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন, বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বিভিন্ন ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

খুলনা প্রান্তে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বাগেরহাট-১ আসনের শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, খুলনা-৪ আসনের আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

খুলনা প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর