ভয়াবহ বন্যার কবলে ভাসমান নগরী ভেনিস
১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৫
ইতালির ভেনিসকে বলা হয় ভাসমান নগরী। এই শহরে নেই কোনো গাড়ি চলার রাস্তা। ফেরি কিংবা নৌকাই এখানে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। ইউরোপের সবচেয়ে দর্শনীয় শহরগুলোর মধ্যে অন্যতমও এটি।
সেই ভাসমান নগরীই এখন পানির নিচে। অর্ধ শতকের মধ্যে প্রথম এমন ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হলো শহরটিকে। শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতেই ঢুকে পড়েছে পানি। ফলে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
ভেনিসের মেয়র লুইগি ব্রুগনারো এই বন্যাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলে চিহ্ণিত করেছেন। এই বন্যার মাশুল চড়া হবে বলেও মনে করেন তিনি। এবারের বন্যা তার স্থায়ী চিহ্ন রেখে যাবে বলেও টুইটারে লিখেছেন মেয়র।
স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৬ ফুট উঁচুতে বইছে জোয়ারের পানি। এর আগে সবশেষ ১৯৬৬ সালে এতো উঁচুতে উঠেছিল জোয়ারের পানি।
বন্যার পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়া শহরবাসীর জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। জোয়ারে ভেনিসের বিখ্যাত সেন্ট মার্কস ব্যাসিলিকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পানি ঢুকেছে। দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ঢুকে পড়েছে পানি। মঙ্গলবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন নিজ বাড়িতে বিদ্যুতায়িত হয়ে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১২০০ বছরে এই নিয়ে ছয়বার বন্যার কবলে পড়েছে ব্যাসিলিকা। সেন্ট মার্কস কাউন্সিলের সদস্য পিয়েরপাওলো ক্যাম্পোস্ত্রিনি বলেছেন, এর মধ্যে গত ২০ বছরেই চারবার ডুবেছে ব্যাসিলিকা। বন্যার কারণে অতি প্রাচিন এই ব্যাসিলিকার পিলার বা কলামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতালির উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ভেনিস ১০০ টিরও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত। পানিপথই এই শহরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
বন্যায় সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন মেয়র লুইগি ব্রুগনারো। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির ছবি ও ভিডিও শেয়ার করতে অনুরোধ করেছেন তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, এতে সরকারি সহায়তা পাওয়া সহজ হবে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, বন্যায় ভেনিসের ব্যবসার বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন ক্যাফে বা রেস্টুরেন্টের চেয়ার-টেবিলগুলোকে পানিতে স্রেফ ভাসতে দেখা গেছে।