Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ সপ্তাহে দেড় হাজার কর্মী ফিরলেন সৌদি আরব থেকে


১৪ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২১

ঢাকা: সৌদি আরবে পুলিশের অব্যাহত ধরপাকড় ও অভিযানে আরও ২১৫ বাংলাদেশি শ্রমিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশটি থেকে এ মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে দেশে ফিরতে বাধ্য হলেন এক হাজার ৫৬১ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। একইসঙ্গে এ বছর ফেরত আসা শ্রমিকের সংখ্যাও পেরিয়ে গেছে ২১ হাজার।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক সূত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে আলাদা আলাদা দুইটি ফ্লাইটে করে নতুন ২১৫ বাংলাদেশি শ্রমিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে দেশে। এর মধ্যে রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে ৮৬ জন ও রাত ১টা ১৫ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০২ ফ্লাইটে বাকি ১২৯ জন বাংলাদেশি ফেরত আসেন। বরাবরের মতো ফেরত আসা শ্রমিকদের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়।

ফেরত আসা শ্রমিক কিশোরগঞ্জের সোহরাব বলেন, যে পোশাকে ছিলাম, সেভাবেই চলে আসতে হয়েছে। তিনি জানান, দুই বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু ধরপাকড়ে তার সব স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সোহরাবের অভিযোগ, রুম থেকে তাকে ধরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সাড়ে ছয় লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব গিয়েছিলেন আরেক শ্রমজীবী গাজীপুরের হারুন। তিনি জানান, একটি নির্মাণাধীন কোম্পানিতে কাজ করতেন। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে তাকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলার শাহবুল ইসলাম জানান, বিদেশ যাওয়ার আগে দেশে তিনি নিয়মিত গাড়ি চালাতেন। দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স জাভেদ ওভারাসিজের প্রলোভনে পড়ে চার মাস আগে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু চার মাসেও কোনো বেতন পাননি। এখন ধরপাকড়ের শিকার হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো শাহবুলকে।

বিজ্ঞাপন

সিলেটের কামাল আহাম্মেদ, টাঙ্গাইলের মো. জাহেদ আলী, গাজীপুরের ইমরান, কুমিল্লার ইব্রাহিম, নরসিংদীর বাবুলসহ আরও অনেকেই জানালেন, তারাও তাদের খরচের টাকাটাও তুলতে পারেননি।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছ‌র এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে শুধু সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হলো। দেশে ফেরা অনেক কর্মীদের অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য তারা কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা দিলেও আকামা দেওয়া হয়নি। আবার পুলিশ গ্রেফতার করলেও কফিল কোনো দায় নিচ্ছে না। বিষয়গুলো দুঃখজনক।

শরিফুল জানান, ফেরত আসা সবাই স্বাভাবিকভাবেই ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয়, সেজন্য যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বি‌শেষ ক‌রে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

এদিকে, সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সুমির আগামীকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ জানিয়েছেন, একই ফ্লাইটে আরও ১০০ জন নারী সৌদি আরব থেকে ফিরবেন।

দেশে ফেরত প্রবাসী শ্রমিক শ্রমিক ফেরত সৌদি আরব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর