Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের সবাই ক্ষমতাসীন দলের, অভিযোগ রিজভীর


১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৫২

ঢাকা: পেঁয়াজের দাম দফায় দফায় বেড়ে নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার পেছনে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে কারসাজির সঙ্গে জড়িত সবাই ক্ষমতাসীন দলের। তারা এতটাই ক্ষমতাশালী যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ব্যর্থ। তাই এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার দলটির কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়।

মিছিল শেষে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের কেজি দেড় শতকের পর ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেছে। সর্বশেষ যোগ হয়েছে আরো ৪০ টাকা। ২৪০ টাকা ছাড়িয়েও থামেনি দাম। দাম আর কত বাড়বে— এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। বরং সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী যেদিন বললেন বাজার নিয়ন্ত্রণে, তার পরদিনই এক লাফে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে যায় কেজিতে। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর পেঁয়াজের দাম আরও বেড়ে গেছে।

রিজভী আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গতবছর থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে আছে, তা চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত। তাহলে এভাবে লাগামহীনভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে কেন? রাজধানীর খুচরা বাজারে,পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে পেয়াজের দাম প্রতি কেজি ২৪০ টাকা ছাড়িয়েছে। মন্ত্রীদের বক্তব্য সিন্ডিকেটকে উসকে দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে মন্ত্রীদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ মনে করে, পেঁয়াজ নিয়ে যে সিন্ডিকেট লুটতরাজ করছে, তাদের সঙ্গে কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি সরাসরি জড়িত। এ কারণে পেয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলছেন তারা। আমরা অবিলম্বে ব্যর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথভাবে যাচাই করতে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো গণবিজ্ঞপ্তকে ‘নিয়ন্ত্রণমূলক’ বলে অভিহিত করেন রিজভী।

তিনি বলেন, গণবিজ্ঞপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য যথাযথভাবে যাচাই করে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারি এ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক। মূলত সরকারদলীয় লোক ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের খবর যেন প্রকাশ না পায়, সেজন্যই এ আদেশ জারি করা হয়েছে। লোক দেখানো দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে কিছু ছিচকে দুর্নীতিবাজের নাম প্রকাশের পর গণমাধ্যমে সরকারের শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকা প্রকাশ হওয়ার আতঙ্ক থেকে এ আদেশ জারি করা করা হয়েছে। এমনিতে দেশে গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। তার ওপর একর পর এক কালো আইন তৈরি করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেই চলেছে এই সরকার।

এসময় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, তিনি শরীরের ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। বিএনপি চেয়ারপারসনকে কোনো চিকিৎসাই দেওয়া হচ্ছে না। গত আট দিন তার কাছে কোনো চিকিৎসক যাননি। জরুরিভিত্তিতে তাকে উন্নত চিকিৎসা না দিলে তার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।

বিজ্ঞাপন

রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের সভাপতি শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটুসহ অন্যরা অংশ নেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি পদত্যাগ দাবি পেঁয়াজ সিন্ডিকেট রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর