Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পেঁয়াজের রাজনীতিতে আসায় বিএনপিকে ধন্যবাদ’


১৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৮:১৮

ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিকে ধন্যবাদ জানাই এই জন্য যে, তারা তাদের রাজনীতিকে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা থেকে বের করে পেঁয়াজের মধ্যে নিয়ে এসেছেন।

রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ঐক্যজোট আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিএনপিকে বলব, আপনারা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যে অপরাজনীতি সবসময় করে আসছেন, সেখান থেকে যে পেঁয়াজের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে ভালো করেছেন। আমি অনুরোধ জানাব, আপনারা অবশ্যই সরকারের সমালোচনা করুন। সরকার কোথায় ব্যর্থ হচ্ছে, সেটি তুলে ধরুন। কিন্তু সরকার যে নানা ক্ষেত্রে প্রচণ্ডভাবে সফল, এটি বিশ্ব নেতারা বলছে, বিশ্বব্যাংক বলছে, অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া ব্যক্তিরা বলছেন- সেটিই আপনারা দয়া করে বলবেন। দায়িত্বশীল বিরোধীদলের কাজই তো এরকম।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বলেছেন, তারা সোমবার সারাদেশে পেঁয়াজ নিয়ে বিক্ষোভ করবেন। ফখরুল সাহেবকে ধন্যবাদ যে, তারা তাদের রাজনীতিকে বেগম জিয়ার অসুস্থতা থেকে বের করে এনে পেঁয়াজের মধ্যে নিয়ে এসেছেন। তবে পেঁয়াজের এই উচ্চমূল্য থাকবে না। আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন বিদেশ থেকে বিমানে করে পেঁয়াজ আসছে। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজও বাজারে আসা শুরু করেছে। সুতরাং শিগগিরেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।’

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের ব্যবস্থার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘কারা এই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির সাথে যুক্ত, সেটা বের করার জন্য গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছে। যারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে যাদেরকে চিহ্নিত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’

বিজ্ঞাপন

মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘মাওলানা ভাসানী কখনও ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিকে একটি ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। তিনি যদি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করতেন, তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হতে পারতেন। তার হাত ধরেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে। পরের বছর ১৯৫০ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সভাপতি করে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। অর্থাৎ এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বেই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী বলতেন, শেখ মুজিবের যে সাংগঠনিক দক্ষতা, সেটি আর কারও মধ্যে নেই। এবং বঙ্গবন্ধু মুজিব যতদিন বেঁচে ছিলেন, মাওলানা ভাসানীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন, তার দেখভালও করতেন। মাওলানা ভাসানী যেভাবে রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন, যুগ যুগ ধরে তাঁর কাছ থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে। কারণ রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, জনসেবা।’

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির বড় বড় নেতা যারা কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন, আজকে স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, তাদেরকে অনেকেই মাওলানা ভাসানীর দল করতেন। অর্থাৎ, তারা ক্ষমতার জন্য বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। অনেকে আবার জাতীয় পার্টিতেও যোগ দিয়েছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলতে চাই, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবেও অন্যদল করতেন। রিজভী সাহেরও ছাত্রজীবনে অন্য দল করতেন। মওদুদ আহমেদ সব দলই করেছেন। বিএনপিতে বড় বড় নেতা বেশির ভাগই হচ্ছে দলছুট নেতা। সেই দলছুট নেতাদের আমরা দেখতে পাচ্ছি, গত কয়েকদিন ধরে নানা ইস্যুতে কথা বলছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

ড. হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী পেঁয়াজের রাজনীতি বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর