প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে ফ্লোরিডা হত্যাকাণ্ড
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৮:২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাতে মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের ভয়ংকর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন কয়েজন প্রত্যক্ষদর্শী। এ ঘটনায় এক বন্দুকধারী সাবেক ছাত্রের গুলিতে ১৭ জন ছাত্রের মৃত্যু হয়।
ওই স্কুলের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ডেভিড হগ এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানায়, ‘আমরা তখন ক্লাসে বসেছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শুনে একে অপরের দিকে ঘুরে তাকায়। শব্দটি বন্দুকের বলে মনে হওয়ায় শিক্ষক দ্রুত ক্লাসরুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।’
ডেভিড জানায়, এরপর আমরা ড্রিলের শব্দ ভেবে বাইরে বের হয়ে আসি। ক্লাসের সবাই মিলে একটি খালি যায়গায় গিয়ে দাঁড়ালে দেখতে, পায় বহু শিক্ষার্থী সুনামির মতো আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। এরপর আমরা ভীড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে করিডোরের দিকে দৌড়াতে থাকি। তখনও জানতে পারেনি আমরা কেন দৌড়াচ্ছি।
সে সময় একজন প্রহরী এসে বলে, কোথায় যাচ্ছ? বন্দুকধারী সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।
একজন ছাত্রী তখন ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার চোখেমুখে পানি দেওয়া হয়। তবে বাকিরা অনেক স্বাভাবিক ছিল।
ডেভিডের বোনও ওই স্কুলের শিক্ষার্থী। খবর নিয়ে জানতে পারে তার কোন ক্ষতি হয়নি।
ডেভিড ওই স্কুলের ছাত্র হলেও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত ছিল। এ ঘটনার পর নিজের মোবাইল ফোনে মানুষের স্বাক্ষাৎকার রেকর্ড করতে শুরু করে।
ডেভিড জানিয়েছে, তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি যদি মরেও যায় তাহলে মানুষ এ ঘটনার ভিডিওটি অন্তত দেখতে পাবে।
এ ঘটনার ঘন্টাখানেক পরে সোয়াটের একটি দল এসে সবাইকে শুয়ে পড়তে বলে। অনেকক্ষণ পর যখন তাদের উঠতে বলা হলো, তখন তারা হাত ওপরে তুলে সারি বেঁধে বাইরে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ১৯ বছর বয়সী নিকোলাস ক্রুজের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা অভিযোগ ছিল। আইনশৃঙ্খাভঙ্গের অভিযোগে গত বছর মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
নিকোলাস তাদের জীবনের জন্য হুমকি মনে করে বহু শিক্ষার্থী ক্রুজের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনে।
ওই স্কুলের এক ছাত্র স্থানীয় টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আগে থেকেই অনেকে এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনুমান করেছিল। তাদের অনেকে কৌতুক করে বলতো ক্রুজ একদিন স্কুলে গুলি চালিয়ে সবাইকে হত্যা করতে পারে।
চ্যাড উইলিয়ামস নামের একজন ছাত্র সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপারে ক্রুজের ব্যাপক আগ্রহ ছিল। স্কুল থেকে বহিষ্কার হওয়ার আগে প্রায়ই সে স্কুলের ফায়ার এলার্ম বাজিয়ে দিত। সে অনেকটা সমাজচ্যুত ব্যক্তির মতো ছিল। তার কোনো বন্ধু-বান্ধব ছিল না বলেও জানিয়েছে তার এক সহপাঠী।
সারাবাংলা/এমআই