বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে গিয়ে লিফট দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতারা
১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে গিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলটির কয়েকজন নেতা। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ-ভাঙাচোরা লিফটটির চেইন ছিঁড়ে দোতলার কাছাকাছি থেকে নিচতলায় গিয়ে পড়ে। এসময় তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত তারা অক্ষতভাবে লিফট থেকে বের হতে পেরেছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. সেলিম।
সেলিম সারাবাংলাকে জানান, হাসপাতালের পাঁচতলায় অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে আহতদের দেখে নিচতলায় নামার জন্য লিফটে উঠেছিলেন বিএনপি নেতারা। এদের মধ্যে ছিলেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন, এম এ আজিজ, সাইফুল ইসলাম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটনসহ কমপক্ষে ১২ জন নেতা। তাদের সঙ্গে যাওয়া আরও নেতাকর্মীরা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিলেন।
শাহাদাত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘লিফট যখন দোতলার কাছাকাছি আসে, তখন হঠাৎ একটি শব্দ হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে লিফটটি নিচতলা থেকে আরও প্রায় এক হাত নিচে দেবে যায়। আমরা বুঝতে পারি, চেইন ছিঁড়ে লিফটটি নিচে পড়ে গেছে। আমরা লিফটের বদ্ধ দরজায় আঘাত করতে থাকি। আমাদের যেসব নেতাকর্মীরা সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন, তারা শব্দ শুনতে পেয়ে আমাদের উদ্ধার করেন। দরজা খোলার পর আমরা দুইহাত দিয়ে মেঝেতে ভর দিয়ে ওপরে উঠে আসি।’
সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দরজায় আঘাতের শব্দ শুনে আমরা একজন লিফটম্যানকে খুঁজে আনি। তিনি লাঠি দিয়ে দরজা ফাঁক করেন। এরপর নেতারা সবাই একজন, একজন করে উঠে আসেন। প্রথমে ভেবেছিলাম, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। কিন্তু লিফটম্যান জানিয়েছেন, বিদ্যুতের কোনো সমস্যা হয়নি। চেইনে সমস্যা হয়েছে।’
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘লিফটটি অনেকটা ভাঙাচোরা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ বলে আমাদের মনে হয়েছে। অথচ প্রতিবছর মেডিকেল খাতে এত বাজেট বরাদ্দ আসে, এই টাকা কোথায় যায় আমরা জানি না। মেডিকেলের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যদি লিফটের এই অবস্থা হয়, তাহলে রোগী-তাদের স্বজনদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন এই হাসপাতালে নতুন লিফট স্থাপন করা হয়েছিল। এরপর থেকে আর লিফট আসেনি। দুর্নীতির মাধ্যমে টাকাগুলো আত্মসাৎ করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত নায়েক আব্দুল হামিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘লিফট সামান্য দেবে গিয়েছিল। এতে কয়েকজন আটকা পড়েছিল ভেতরে। পরে সবাইকে বের করা হয়েছে। কারও কোনো ক্ষতি হয়নি।’
এর আগে রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা ব্রিক ফিল্ড রোডে বড়ুয়া ভবন নামে একটি পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় বিস্ফোরণে দেওয়াল বিধ্বস্ত হয়। আশপাশের আরও কয়েকটি বাসা এবং দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণে নারী ও কিশোরসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন।