Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শীতে নিপাহ, রোটা ভাইরাস ও চিকেনপক্সের প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা নেই


১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩০

ঢাকা: এবারের শীত মৌসুমে নিপাহ, রোটা ভাইরাস ও চিকেনপক্সের প্রাদুর্ভাবের কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তবে সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হতে পারে আর সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) আইইডিসিআর কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন নিপাহ ভাইরাস ইনফেকশন অ্যান্ড আদার সিজোনাল ডিজিজ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘শীত মৌসুমে বাংলাদেশে সচরাচর ইনফ্লুয়েঞ্জা হয় না। এ সময়টাতে সাধারণ ঠাণ্ডা বা কমন কোল্ড, সর্দি, কাশি হয়ে থাকে। এ সব রোগ ছড়ায় ২০০ এর বেশি ভাইরাসের মাধ্যমে যার প্রায় ৭২ শতাংশই রাইনো ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। এই মৌসুমে সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ৩০ থেকে ৫০ ভাগ প্রাপ্তবয়স্করা এবং ৬০ থেকে ৮০ ভাগ শিশুরা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এগুলো হাঁচি, কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০০১-২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩১৩ জন মানুষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। চলতি বছরেও আটজন আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন।’

এবারের শীত মৌসুমে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘শীতকালীন ঐতিহ্য হিসেবে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কাঁচা রস খাওয়ার উৎসব করা হয়। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের কাঁচা রসের উৎসব পরিহার করা খুবই জরুরি। কারণ কাঁচা রস খাওয়ার পর নিপা ভাইরাস আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি। এত দ্রুত মৃত্যু ঘটে যেখান থেকে ফেরানোর কোনো উপায় থাকে না।’

বিজ্ঞাপন

তবে ফুটানো খেজুরের রস নিরাপদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না। তবে ফুটানো খেজুরের রস নিরাপদ। কাঁচা খেজুরের রস বাদুরের মাধ্যমে নিপা ভাইরাস থাকার আশঙ্কা খুবই বেশি।’

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া এবং প্রাণ হরণকারী নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই এবারের শীত মৌসুমে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এবং নিপাহ ডিসেম্বর থেকে মার্চ এ সময়ে রোটা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। কারও রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া হলে সেটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এমন সব স্থানে যেখানে জনসমাগম বেশি থাকে। যেমন স্কুল, কলেজ, হোস্টেল বা এতিমখানার মতো স্থানগুলোতে।

কর্মশালায় আরও বলা হয়, বাংলাদেশের ৩১টি জেলায় বিভিন্ন সময়ে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেছে বিগত ১৮ বছরে । এ রোগের লক্ষণ সাধারণত এনসেফেলাইটিসের মতো। বিশেষ করে জ্বর, মাথা ব্যথা, খিচুনি, প্রলাপ বকা ইত্যাদি। স্তন্যপায়ী প্রাণী বাদুরের মাধ্যমে আমাদের দেশে এ রোগ ছড়িয়ে থাকে। বিশেষ করে বাদুর মুখ নিশ্রিত লালা বা মূত্র মিশ্রিত কাঁচা খেজুর রস এবং বাদুরের খাওয়া ফল খেলে নিপাহ হতে পারে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার প্রায় ৭০ শতাংশ। তাই এ মৌসুমে কাঁচা খেজুর রস খাওয়া থেকে বিরত থেকে নিপাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানানো হয়।

কর্মশালায় মৌসুমি রোগ সম্পর্কে তিনটি পৃথক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে আইইডিসিআর-এর বিশেষজ্ঞ ড. এসএম আলমগীর হোসেন বর্তমান সময়ে শ্বাসতন্ত্রজনিত জটিলতা বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

রোটা ভাইরাস বিষয়ক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মনজুর হোসেন খান ও নিপাহ ভাইরাসসহ শীতকালীন অন্যান্য ভাইরাস ও কমন কোল্ড ডিজিজ নিয়ে ব্রিফ করেন ডা. শারমিন সুলতানা।

টপ নিউজ ভাইরাস রোগজীবাণু

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর