কক্সবাজারে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চলছে চাঁদাবাজি
২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৩০
কক্সবাজার: কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছবাহি গাড়ি থেকে টোকেন ফি’র নামে চলছে চাঁদাবাজি। ভুক্তভোগী মাছ ব্যবসায়ী ও চালকদের অভিযোগ কোনো ধরনের রশিদ ছাড়াই শুধুমাত্র গায়ের জোরেই দৈনিক দুশতাধিক টমটম (অটোরিকশা)সহ বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলা পিক-আপ ও মিনিট্রাক চালক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর লোকজন।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলা পিক-আপ ও মিনি ট্রাক চালক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর পক্ষ থেকে মাছবাহি টমটম, পিকআপ এবং ট্রাক প্রতি টাকা নিচ্ছে কয়েকজন যুবক। তার মধ্যে ট্রাক ও পিকআপ পরিবহন চালকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরে রশিদ দিচ্ছে। কিন্তু মাছবাহি টমটম চালকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও রশিদ দিচ্ছে না। এতে চরম বিরক্ত ফিসারীঘাটের মাছ ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও গাড়ির চালক।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পিকআপ ও মিনি ট্রাক চালক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর ম্যানেজার মোরশেদ জানান, নিবন্ধনভুক্ত সংগঠন ‘কক্সবাজার জেলা ট্রাক, পিকআপ ও মিনি ট্রাক পরিবহন সংস্থার’ এর উদ্যোগে ফিসারীঘাট থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা ও বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া মাছবাহি ট্রাক থেকে নির্ধারিত মূল্যের ফি নেওয়া হয়। রশিদের মাধ্যমে এই ফি নেওয়া হয়। চট্টগ্রামগামী ট্রাক থেকে নেওয়া হয় ২৩০ টাকা। ঢাকা, খুলনা ও বেনাপোল সহ অন্যান্য জায়গায় নেওয়া হয় ৩৩০ টাকা। ২০০-৩০০ টাকার সঙ্গে ৩০ টাকা অতিরিক্ত যুক্ত করার কারণ হলো সমিতির সদস্যদের কল্যাণ তহবিলের জন্য।
কিন্তু দৈনিক দুই শতাধিক টমটম থেকে ২০ টাকা করে নেওয়ার বৈধতা কী জানতে চাইলে তিনি পরিষ্কারভাবে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। শুধু বলেন, টমটম থেকে যে টাকা নেওয়া হয় তা কর্মচারীদের খরচে ব্যবহার করা হয়।
টমটম চালকদের রশিদ দেওয়া হয় না কেন, এমন প্রশ্নেও কোনো উত্তর দিতে পারেনি। বরং এই প্রসঙ্গ কাটিয়ে বলেন টাকাটা জোর করে নেওয়া হয় না।
কিন্তু খবর নিয়ে জানা যায়, রশিদবিহীন এ টাকা নেওয়া হয় জোর করে। এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করা হলে তাকে হেনস্থা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ফিসারী ঘাটে ব্যবসা করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ফিসারীঘাটে জোর যার মল্লুক তার এই নীতি চলছে। তার‘ই একটি অংশ হচ্ছে টমটম চালকসহ বিভিন্ন গাড়ি থেকে হাজার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা। এই অনিয়ম‘ই রীতিমত নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করেনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নীরব রয়েছে।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসানুল হক জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এতে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।