বিষাক্ত ঢাকার বাতাস, মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা
২২ নভেম্বর ২০১৯ ১১:০০
ঢাকা: শীত আসতে না আসতেই ধুলায় ধূসর ঢাকার আকাশ। ধুলার পরিমাণ যে স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়েছে, তা গত কিছুদিনের দূষণ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার তালিকা থেকেও স্পষ্ট। এসব তালিকায় ঢাকা বায়ু দূষণে ঘুরেফিরে আসেছে শুরুর দিকে। শুধু তাই নয়, চলতি নভেম্বরের ১৭ থেকে ১৯ তারিখে বায়ু দূষণ সূচক একিউআই-এ (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) বায়ু মানের স্কেল অনুযায়ী ঢাকা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের নগরী। এ পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসী, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শীতকালে বৃষ্টির স্বল্পতার পাশাপাশি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি এবং ঢাকার আশপাশের ইটভাটাসহ কলকারখানাগুলোর দূষণকে এ অবস্থার জন্য দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আন্তরিক ও পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একিউআইয়ের সূচক অনুযায়ী, ০-৫০ পর্যন্ত বায়ু মানকে সন্তোষজনক বা ঝুঁকিহীন বলা হচ্ছে। ৫০-১০০ ও ১০০-১৫০-এর মধ্যে থাকলে শিশু, হাঁপানি ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগা রোগীদের বাইরে বের হওয়া সীমিত করতে বলা হয়েছে। এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের দীর্ঘসময়ের জন্য বাহ্যিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ১৫০-২০০ স্কোর অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে পড়ে এবং এই মানের বাতাসে বসবাস প্রতিটি মানুষই গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে আছেন। আর ২০০-৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং এটি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কাবস্থার সূচক। আর বিপজ্জনক অবস্থা হিসেবে বলা হয়েছে ৩০০-৫০০ স্কোরধারী অঞ্চলগুলোকে।
একিউআই স্কোর অনুযায়ী, বর্তমান সময়ে ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর, খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে। এই অবস্থায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন নগরীর কয়েক কোটি বাসিন্দা। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও বক্ষব্যধিতে আক্রান্ত এবং দীর্ঘসময় বাইরে কাজ করেন যারা, তারা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। এ অবস্থায় বায়ু দূষণঘটিত রোগব্যধিও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. শামীমা আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি অ্যাজমা, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ), এলপিডি (লিম্ফোপ্রোলিফারেটিভ ডিজিজ) ইত্যাদি রোগও দেখা দিচ্ছে। এলপিডির মতো রোগ আগে খুব একটা দেখা না গেলেও এখন এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
বায়ু দূষণের কারণে যেসব রোগব্যাধি হয়, সেগুলো থেকে রক্ষার উপায় কী— জানতে চাইলে শামীমা বলেন, আসলে বায়ু দূষণের কারণে যেসব রোগব্যাধি হয় তার জন্য দায়ী ধুলা ও বালির সঙ্গে মিশে থাকা ক্ষুদ্র আকারের পার্টিকেল বা কণা, যেগুলো আমাদের ফুসফুসে পৌঁছে ফুসফুসের ক্ষতি করছে। এর থেকে বাঁচার জন্য আসলে মাস্ক পরা বা সচেতনতাই সব নয়। মাস্ক ব্যবহার করলে ধুলার বড় পার্টিকেলগুলো আটকালেও ক্ষুদ্র পার্টিকেলগুলো ঠিকই ফুসফুসে পৌঁছে যায়। তাই ধুলার উৎস দূর করতে হবে। শীত আসার আগেই শহরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। যেখানে উন্নয়ন কাজ চলছে, সেগুলোও ঢেকে করতে হবে।
ঢাকার বাতাসের এই মাত্রা ছাড়া দূষণের কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এর পেছনে মূলত দায়ী বৃষ্টির স্বল্পতা, ঢাকায় চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি, যানবাহনের আধিক্য ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় গড়ে ওঠা কলকারখানা ও ইটভাটা।
এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়াসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালামের সঙ্গে। রসায়নের পাশাপাশি বায়ুমণ্ডল বিজ্ঞান তার গবেষণার বিষয়। নাসা, যুক্তরাষ্ট্র, স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডেনের সহযোগিতায় তিনি ঢাকা ও ভোলায় বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের ওপর দু’টো গবেষণার প্রধান ছিলেন।
নভেম্বরের শুরুতেই ঢাকায় ধূলার দূষণ পরিস্থিতি এতোটা দুঃসহ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক সালাম সারাবাংলাকে বলেন, একদিকে বৃষ্টি কমে যাওয়া ও অন্যদিকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে ঢাকার বাতাসে ধুলার পরিমাণ বেড়ে গেছে। প্রায় সম্পূর্ণ ঢাকায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে, মেট্রোরেলের লাইন বসানোর কাজ চলছে, এবং ঢাকার আশেপাশে অবস্থিত কারখানা, বিশেষত ইটের কারখানাগুলোও চালু হয় এ সময়েই। ভারতের রাজধানী দিল্লির দূষণের প্রভাব ঢাকাতেও পড়ে বলে জানান তিনি।
বায়ু দূষণ মানুষ ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর; বিশেষত এর কারণে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে বলে জানান বৈশ্বিক বায়ুমণ্ডলীয় রসায়নের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, যেসব ধুলিকণার আকার ১০ পিএম বা এর কাছাকাছি অর্থাৎ কিছুটা বড়, সেগুলো নাকের মাধ্যমে ঢুকে গলা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা শরীরের এই অংশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অন্যদিকে ২.৫ পিএমের চেয়ে বড় কিন্তু ১০ পিএমের চেয়ে ছোট পার্টিকেলগুলো আরও ভেতরে এবং আড়াই পেরিমিটারের চেয়ে ছোট কণাগুলো সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে ফুসফুসের গায়ের ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দেয়। টানা কয়েকমাস নিঃশ্বাসের মাধ্যমে এরকম ক্ষুদ্র আকারের ধুলিকণা গ্রহণ করতে থাকলে সেটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক সালাম জানান, আরও ছোট কণাগুলো রক্তে মিশে যায় এবং আলট্রা ফাইন পার্টিকেল অর্থাৎ অত্যন্ত ক্ষুদ্র কণাগুলো আমাদের মস্তিষ্কে পৌঁছে ক্ষতি করে। ধুলিকণা বলতে কেবল মাটির কণা নয়, এর মধ্যে অনেকরকম ধাতব কণাও থাকে, যা রক্তে মিশে লিভার, কিডনি ইত্যাদির ক্ষতি করে।
বায়ু দূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে স্মোগ অর্থাৎ স্মোক বা ধোঁয়া ও ফগ বা কুয়াশার মিশ্রণ। ড. সালাম বলেন, বাতাসে থাকা ধূলিকণা, গাড়ি ও অন্যান্য যন্ত্র থেকে বের হওয়া ধোঁয়া ও বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতার সঙ্গে মিলে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে নতুন ধরনের পদার্থ তৈরি হয়, যা মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ত্বক ও চোখের ক্ষতির পাশাপাশি দীর্ঘসময় ধরে নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলে এসব রাসায়নিক পদার্থ শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে।
দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে ঢাকার আশপাশে থাকা কলকারখানার কথা বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দূষণের মাত্রা ঢাকাকেন্দ্রিক নাকি ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে? জানতে চাইলে অধ্যাপক সালাম বলেন, ধুলার সঙ্গে নানারকম রাসায়নিক মিলেই বায়ু দূষণ ঘটছে। ব্ল্যাক কার্বন, অর্গানিক কার্বন, সালফেট, নাইট্রেটসহ নানারকম হালকা ও ভারি ধাতু মিশে বায়ু দূষণ ঘটছে। শীতকালে বাতাস উত্তর থেকে দক্ষিণে যায়। তাই ঢাকার বাইরে থেকে দূষিত বাতাস এসে ঢাকার নিজস্ব দূষণের সঙ্গে মিশে ঢাকাকে আরও দূষিত করে তুলছে। সেই বায়ু আবার দক্ষিণে যাচ্ছে। এভাবে সারাদেশেই দূষণের মাত্রা ছড়াচ্ছে। শীতকালে তাই বাংলাদেশে বায়ু দূষণ বেশি হয়।
দূষণ কমানোর উদ্যোগ নিয়ে তাদের পরামর্শ চাওয়া হয় কি না— জানতে চাইলে এই পরিবেশ বিজ্ঞানী বলেন, ঢাকার দূষণ কীভাবে কমানো যায় সেটা কর্তৃপক্ষ নিজেরাও জানেন। চার থেকে পাঁচটি প্রধান সমস্যাই মূলত দায়ী। অতিরিক্ত যানবাহন, কলকারখানা, বছরজুড়ে চলা নির্মাণকাজ— এগুলোই মূল কারণ।
নভেম্বর আসার আগে চাইলেই সচেতন পদক্ষেপ নিয়ে দূষণ কমানো যায় বলে মনে করেন অধ্যাপক সালাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ খুব একটা পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চাইলেই শীতকাল আসার আগে বন্ধ করা যায়। কিন্তু দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার কারণে এটা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, সব মহল থেকেই সচেতন হলে নভেম্বর আসার আগে ধুলাদূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব।
সাধারণ মানুষেরও সচেতন থাকার বিকল্প নেই বলে মত অধ্যাপক সালামের। নিজেকে ধূলা থেকে মুক্ত রাখার পাশাপাশি নিজেরাও কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখাতে পারেন। শীতকালে আবর্জনা বা শুকনো পাতা জড়ো করে পোড়ান অনেকে। এতে বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সারাবছরই কিছু সচেতনতা গ্রহণ করতে হবে। যেমন— অকারণে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা, অকারণে পানি ছেড়ে রাখা যাবে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি উৎপাদনে ফসিল ফুয়েল পোড়ানো হয়। তাই বিদ্যুৎ ও পানির বাড়তি ব্যবহার না করেও পরিবেশে অবদান রাখতে পারি আমরা।
অধ্যাপক সালাম বলেন, পানি ও গাছপালা দূষণের অনেকটাই শুষে নেয়। ঢাকায় জলাধার কমে যাওয়াও দূষণের অন্যতম কারণ। পরিকল্পিত নগরব্যবস্থা গড়ে সেখানে প্রচুর গাছপালা ও জলাধার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ মানুষও সাধ্যের মধ্যে যেটুকু সম্ভব গাছ লাগিয়ে পরিবেশ বাঁচাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিবছর এই সময়ে দূষণ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক সারাবাংলাকে বলেন, এই সময়ে ঢাকার আশপাশে ইটভাটাগুলো উৎপাদন শুরু করে। সেটার সঙ্গে ঢাকার মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্ট ধুলাবালির কারণে দূষণ মাত্রা ছড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকায় একইসঙ্গে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ ও অতিরিক্ত যানবাহনের ধোঁয়া। নিয়ম অনুযায়ী সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি বা নির্মাণ কাজ করার সময় পানি ছিটানো, মালামাল বহনকারী লরি ও ট্রাক এবং নির্মাণস্থল ঢেকে কাজ করার মাধ্যমে এই দূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যা। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মানায় বাতাসে ধূলিকণা ও দূষণ ছড়াচ্ছে।
জিয়াউল হক বলেন, দেখা যায় একই সড়ক একবার খুঁড়তে শুরু করে ওয়াসা, কিছুদিনের মধ্যেই আরেকবার তিতাস গ্যাস খননকাজ শুরু করে। এভাবে সারাবছরই একাধিক খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকে। এতে দূষণ বেড়ে যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এসব কাজ যারা করায়, তাদের মধ্যে নিজস্ব সমন্বয়ের অভাবে এমনটা ঘটছে। এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করায়। এসব ঠিকাদারদের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তাই তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।
ঢাকার মাত্রাতিরিক্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতর কী ব্যবস্থা নিয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরই মধ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তারা কাজ শুরু করেছেন। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে কাজ শুরু করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া আবসান খাতের মালিকদের প্রতিষ্ঠান রিহ্যাব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়, তিতাস গ্যাস, ঢাকা ওয়াসা, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও দুই সিটি করপোরেশনে চলতি মাসের ৬ ও ১৯ তারিখ চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলাকালীন পানি ছিটানো, কাঁচামাল ঢেকে রাখাসহ বিভিন্ন নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে সেই চিঠিতে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএকে চিঠি দিয়ে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী পুরনো গাড়ি সরানোর আবেদনও জানিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর।
জিয়াউল হক বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য, ঢাকার দূষণের মাত্রা যেন কিছুতেই ৩০০ না ছাড়ায়। এই দূষণের মাত্রা কমানোর উদ্যোগ হিসেবে আগামী ২৫ নভেম্বর গণপূর্ত, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়; আবাসন সংগঠন রিহ্যাব; তিতাস গ্যাস, ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদের সমন্বয়ে একটি বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে বায়ু দূষণের পাশাপাশি শব্দ দূষণের পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হবে।
প্রতিবছরই নভেম্বর থেকে বায়ু দূষণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না— জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, আগে থেকেই দায়িত্বশীল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ বছর ঢাকার আশপাশে থাকা ৭০০ থেকে ৮০০ ইটভাটার মধ্য থেকে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ইট উৎপাদনকারী অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। এমন ইটভাটার সংখ্যা ২০০ থেকে আড়াইশ, যাদের বন্ধ করার বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ছবি- হাবিবুর রহমান এবং আবদুল্লাহ আল মামুন এরিন