তাজরিনের আগুনে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ, অপরাধীদের শাস্তির দাবি
২২ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:২৬
ঢাকা: সাত বছর আগে রাজধানীর অদূরে সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টস কারখানায় ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিয়েছিল ১১৩ শ্রমিকের প্রাণ। আহত হয়েছিলেন আরও শতাধিক শ্রমিক। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবি ছিল শুরু থেকেই। কিন্তু এখনো এর কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের পেছনে যাদের দায় ছিল, শাস্তির মুখোমুখি হননি তাদেরও কেউ।
এ অবস্থায় সাত বছর পেরিয়ে গেলেও তাজরীন ফ্যাশনের আগুনে নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎকসা ও পুনর্বাসন এবং অপরাধীরা শাস্তির মুখোমুখি করার দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি সংগঠন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গ্রিন বাংলা ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ তৃণমূল গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, এখনো অনেক পোশাক কারখানা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব কারখানা ঠিকমতো পরিদর্শন করা হয় না। ফলে এসব কারখানাতেও তাজরীনের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বক্তারা বলেন, তাজরীনের ওই আগুনে অনেক শ্রমিক আজ পুঙ্গত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আহতের মধ্যে অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। আগুনে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। বিভিন্ন সংগঠন থেকে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা থাকলেও সেই ক্ষতিপূরণের টাকাও সবাই পাননি। সরকারের পক্ষ থেকেও অল্প কিছু শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল।
এ পরিস্থিতিতে তাজরীন কারখানার আগুনে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা। একইসঙ্গে আহত শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থারও দাবি জানান তারা। এসব বাস্তবায়নের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বক্তারা আরও বলেন, তাজরিন ফ্যাশনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয়, সেটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আগুন লাগার পর কারখানার গেট বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছিল। যাদের অবহেলার কারণের শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
গ্রিন বাংলা ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনেরর আহ্বায়ক বাহরানে সুলতান বাহার, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন সহিদ ও বাংলাদেশ তৃণমূল গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি শামীম খান।