‘খালেদা হত্যার নীল নকশা দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে’
২৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৭
ঢাকা: খালেদা জিয়া হত্যার নীল নকশা দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা’ এদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা দিনের পর দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অথচ দেশনেত্রীর জামিন কিংবা সুচিকিৎসার ব্যাপারে প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকারের নিষ্ঠুরতা যেন থামছেই না ‘
‘সরকারের আচরণে জনগণের মনে এখন একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে যে, দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়নের পথে সরকার প্রধান দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন কি না!’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তা শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারেন না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ কারণেই মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলায় তাকে (খালেদা) কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। কিন্তু জনগণ তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন জনগণের সম্মিলিত শক্তি কারাগারের লৌহকপাট ভেঙে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার পানি নিয়ে একটা সুরাহা করে আসবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও মমতা ব্যানার্জীর সাক্ষাৎ কেবলমাত্র শাড়ি আদান-প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানির কোনো হিস্যাই পাওয়া যায়নি। ফেনী নদীর পানি বিনিময় ছাড়াই উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল উষর মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। সেচ মৌসুম চলছে অথচ এখনই নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ অন্যান্য এলাকায় সেচের পানি সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেই বিষয়ে কোন আলোচনাই করেননি।’
রিজভী বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন সীমান্ত হত্যা চলছে। এ নিয়েও শেখ হাসিনা মুখ বন্ধ রেখেছেন। সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা যেন নৃশংস দস্যুতার নামান্তর। দেশ মরুভূমি হয়ে যাক, সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশি মানুষ মরুক, তাতে শেখ হাসিনার কিছু আসে যায় না। তিনি নিজ দেশের জনগণের অন্তঃরুদ্ধ ক্ষোভ টের পান না। তিনি শুধু দিতেই জানেন, নিতে জানেন না। তার ক্ষমতার সোনার হরিণটি নিশ্চিত হলেই তিনি সন্তুষ্ট।’
সরকার দেশের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, কিন্তু বিএনপির মুখ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে ওবায়দুল কাদের নিজের অজান্তেই স্বীকার করে নিলেন- আইন আদালত, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছেন।’
‘মানুষের ভোটাধিকারও নিয়ন্ত্রণ করে রেখে ভোটের আগের রাতের ভোট প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন, কারারুদ্ধ করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি গোরস্থানকে নিয়ন্ত্রণ করে লাশের বিরুদ্ধে মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন।’
‘গুম-খুন-ক্রসফায়ারের মুখেও বিএনপি যেটুকু বলছে সেটিকেও স্তদ্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য। তার বক্তব্য স্বৈরশাসকদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি’— বলেন রিজভী।
কর্মসূচি: বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রোববার (২৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অথবা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুপুর ২টায় সমাবেশ করবে বিএনপি। রিজভী জানান, এরইমধ্যে পুলিশের কাছে আবেদন করেছে বিএনপি। উল্লিখিত দু’টি স্থানের মধ্যে যে কোনো একটিতে সমাবেশ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহেদা রফিক, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজদ প্রমুখ।
খালেদা জিয়া দুর্নীতি পল্টন বিএনপি বিএনপি চেয়ারপারসন রিজভী রুহুল কবির রিজভী