Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তাজরীন অগ্নিকাণ্ড: সাক্ষী আসে না তাই ঝুলে গেছে বিচার


২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:৫৯

ঢাকা: রাজধানীর অদূরে সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আজ ৭ বছর। সেই অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ১১৩ জন শ্রমিক। ভয়াবহ ওই ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানার এসআই খায়রুল ইসলাম মামলা দায়ের করলেও ৭ বছরেও শেষ হয়নি তার বিচারকাজ। এখনো শেষ হয়নি সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার নির্ধারিত তারিখে সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় বিচার থমকে আছে বলে মনে করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মামলাটি এখন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শরীফ এ এম রেজা জাকেরের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর রেহানা আক্তার সারাবাংলাকে জানান, সাক্ষ্যগ্রহণ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই। আদালত যথাসময়ে যথাযথভাবেই সাক্ষীদের সমন পাঠায়। মামলাটি অনেক আগের হওয়ায় সাক্ষীরা তখন তাদের মোবাইল নম্বর দেয়নি। আর তারাতো এক গার্মেন্টসে স্থায়ীভাবে কাজ করেনা। ফলে তাদের কাছে হয়তো সমন পৌঁছাচ্ছেনা। সাক্ষীদের ঠিকানা ফোন নম্বর আপডেট করার দায়িত্ব মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা কর্মকর্তাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী মো. মুর্শিদ উদ্দীন খাঁন সারাবাংলাকে জানান, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি আদালতে সাক্ষী হাজির করতে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে সাক্ষী হাজিরে আমরা যথাসময়ে ইনফরমেশন দেই। তারপরেও তারা হাজির হতে ব্যর্থ হচ্ছে। এর বেশি আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা তো আর বাড়িতে গিয়ে সাক্ষীদের খুঁজে আনতে পারিনা। বিষয়টি মামলার তদন্তাধীন কর্মকর্তার। এসব কারণে বারবার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলাটিতে ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ গত ৭ মার্চ আবির হোসেন নামের এক ব্যক্তির সাক্ষ্য নেন আদালত। এরপর থেকে আরও ৬ টা কার্যদিবস পাড়ি দিলেও কোন সাক্ষী আর আদালতে হাজির হয়নি। মামলাটি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্তের পর ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পুলিশের পরিদর্শক এ কে এম মহসীনুজ্জামান।

মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক দেলোয়ার হোসেন, চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, শামীম, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল আমিন, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু, অ্যাডমিন অফিসার দুলাল উদ্দিন, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনোয়ারুল, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুর ও শহীদুজ্জামান দুলাল।

তবে এই মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে আল আমিন, রানা, শামীম, শহিদুজ্জামান ও মোবারক হোসেন পলাতক রয়েছে। বাকিরা জামিনে রয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তাজরীন গার্মেন্টস ভবনের নকশায় ত্রুটি ও জরুরী নির্গমনের পথ ছিল না। আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বাইরে বের হতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা অগ্নিকাণ্ডকে অগ্নিনির্বাপন মহড়া বলে শ্রমিকদের কাজে ফেরত পাঠিয়ে কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেয়।

২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আমাদের।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ১১৩ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যায়। অন্যদিকে আহত হন আরও ১০৪ গার্মেন্টস শ্রমিক। গার্মেন্টসটিতে সে সময় ১ হাজার ১৬৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ৯৮৪ জন শ্রমিক সেখানে কর্মরত ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহত ১১১ জনের মধ্যে তৃতীয় তলায় ৬৯ জন, চতুর্থ তলায় ২১ জন, পঞ্চম তলায় ১০ জন, পরবর্তীতে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান ১১ জন। ৫৮ জনের লাশ শনাক্ত হওয়ায় তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৫৩ জনের লাশ শনাক্ত না হলেও তাদের জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অগ্নিকান্ড আদালত তাজরীন ফ্যাশন নিশ্চিন্তপুর বিচার মামলা রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী সাভার সিআইডি

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর