উইঘুর মুসলিমদের গোপনে ‘মগজ ধোলাই’ করছে চীন
২৫ নভেম্বর ২০১৯ ১১:০১
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো ফাঁস হওয়া কিছু নথি ও ছবি থেকে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের কয়েকটি ক্যাম্পে কঠোর নিরাপত্তা আর গোপনীয়তার মধ্যে উইঘুর মুসলিমদের জন্য ‘মগজ ধোলাই’ কার্যক্রম চালাচ্ছে চীন। খবর বিবিসি।
যদিও চীনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই ক্যাম্পগুলোতে স্বেচ্ছায় শিক্ষা আর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন অংশগ্রহণকারীরা। কিন্তু বিবিসি প্যানারোমার হাতে আসা ওই ক্যাম্পের কিছু অফিসিয়াল নথি ও ছবি থেকে দেখা গেছে, ক্যাম্পের অধিবাসীদের সেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাদের সাথে পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে এবং যে কোন ব্যপারেই শাস্তি দেওয়ার নামে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে শারীরিক নির্যাতন।
তবে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত চীনের অ্যাম্বাসেডর ওইসব ফাঁস হওয়া নথি ও ছবিকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এর আগে, ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) সহ আরও ১৭টি সহযোগী প্রতিষ্ঠান চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের ওই গোপন ক্যাম্পগুলোতে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সাথে যুক্তরাজ্যের বিবিসি প্যানারোমা এবং জনপ্রিয় পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানেরও অংশীদারিত্ব ছিল। তারাই চীনের ‘মগজ ধোলাই’ ক্যাম্পের নথি ও ছবি ফাঁস করে।
এই তদন্তে উঠে আসা প্রামাণ্য দলিলের ভিত্তিতে জানা যায়, চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় তিন বছর ধরে ওই নির্যাতন ক্যাম্পগুলো গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে মৌলবাদ বিরোধী শিক্ষা কার্যক্রমের নামে বিনা বিচারে কয়েক লাখ মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশ উইঘুরের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ।
ফাঁস হওয়া চীনের সরকারি নথিগুলোকে আইসিআইজের পক্ষ থেকে ‘দ্য চায়না কেবলস’ নামে ডাকা হচ্ছে। চায়না কেবলসের মধ্যে একটি নয় পাতার নির্দেশনা রয়েছে। যা ২০১৭ সালে ঝু হাইলুন নামে একজন জিনজিয়াং প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ডেপুটি সেক্রেটারি ও ওই অঞ্চলের প্রথম সারির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে ক্যাম্পগুলো কিভাবে চালাতে হবে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মুসলিমদের কারাগারে রাখতে হবে, কঠোর শৃঙ্খলা ও শাস্তির ব্যবস্থা রাখার মাধ্যমে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যেন কেউ পালাতে না পারে।