ঢাকা: সমুদ্রসীমার ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ মেরিটাইম অঞ্চল আইন-২০১৯ এ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা আইনটিতে নীতিগত অনুমোদন দেয়। ১৯৭৪ সালের সমুদ্র আইনকে সংশোধন করে মেরিটাইম অঞ্চম আইনটি যুগোপযোগী করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভা সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ মেরিটাইম অঞ্চল ২০১৯ প্রণীত হলে তা ব্যাপকভিত্তিক ‘মেরিটাইম অঞ্চল’ নির্ধারণসহ ‘অভ্যন্তরীণ জলসীমা’ ও ‘রাষ্ট্রীয় জলসীমা’, ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত ‘একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানে সমুদ্র সম্পদের উপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
এছাড়া জলদস্যুতা, সমুদ্রে সন্ত্রাস, সমুদ্র দূষণসহ সমুদ্রে সংঘটিত অপরাধসমূহ ও নৌচলাচল বিঘ্নকারী বেআইনি কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সুষ্ঠু সমুদ্র ব্যবস্থাপনা ও মেরিটাইম সুফল পেতে আইনটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংশোধিত আইনে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সমুদ্র এবং সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠু ববস্থাপনা এবং সঠিক ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সমুদ্রে পণ্য পরিবহন ও যোগাযোগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, জ্বালানি নিরাপত্তা, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজভাঙা শিল্প, দক্ষ জনবল তৈরি, পর্যটন ও পরিবেশ সুরক্ষাকে আগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৯৭৪ সালের আইনে ৯টি ধারা ছিল। বর্তমানে প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনের খসড়ায় ১১৬টি ধারা রাখা হয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মোট সমুদ্রসীমার বিস্তৃতি উল্লেখ করে দেশি-বিদেশি জাহাজ চলাচল কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তার বিস্তারিত বলা হয়েছে। মহীসোপান, গভীর সমুদ্র ও একচ্ছত্র অর্থনৈতিক আঞ্চল থেকে কীভাবে সম্পদ আহরণ করা যাবে, তার বিস্তারিত নির্দেশনাও রয়েছে সংশোধিত আইনে।
প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনটি অনুমোদন পেলে বিদেশি ডুবোজাহাজ ও যুদ্ধজাহাজের বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করার প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। যুদ্ধজাহাজ, সামরিক বিমান ও অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোনো জাহাজ যদি বাংলাদেশের জলসীমায় ডুবে যায়, তবে তা বাংলাদেশের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। সরকারের অনুমতি ছাড়া পারমাণবিক বা অন্য কোনো ধরনের বর্জ্য নিয়ে কোনো জাহাজ বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকলে বাংলাদেশের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী বিচার হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সমুদ্র সীমায় কেউ বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাতে পারবে না বলেও উল্লেখ থাকবে নতুন রূপে হাজির হতে যাওয়া সমুদ্র আইনে।