‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে নারী নিপীড়ন বাড়ছে’
২৫ নভেম্বর ২০১৯ ২১:৫৯
ঢাকা: নারীর ওপর নিপীড়ন, হয়রানি, সহিংসতার ঘটনাগুলোর বিচার হয় না বলেই দিন দিন নারীর ওপর নিপীড়নের পরিমাণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
তিনি বলেন, আমরা নারীর ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছি। কিন্তু নির্যাতন বেড়েই চলছে। এর প্রধান কারণ, আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছি।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারীর ওপর সহিসংতার বিরুদ্ধে এক প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। ধর্ষণসহ সব ধরনের যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে এই কর্মসূচি পালন করে নিপীড়নবিরোধী জোট ‘আমরাই পারি’।
প্রতীকী অনশনে সংহতি জানিয়ে ‘আমরাই পারি’ জোটের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল আরও বলেন, আজকের এই অনশনে যৌন হয়রানির শিকার খুব অল্প কিছু নারী জড়ো হয়েছে। কিন্তু গত ১০ বছরের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে আমাদের গা শিউরে ওঠে। অথচ পরিসংখ্যান শোনার পরও আমরা প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারিনি, পারছি না। কারণ আমাদের মানসিক অবস্থা এখন এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে আমরা বিশ্বাস করছি, বিচার চাইলেও তা পাব না।
কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্য জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, আমরা প্রতীকী অনশন করে কর্তৃপক্ষকে জানান দিতে চাই, নারী সহিংসতার ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, বিক্ষুব্ধ, আমরা ভীষণভাবে শোকাহত।
‘আমরাই পারি’র কর্মসূচিতে বিভিন্ন মানবাধিকার, নারী অধিকার, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
কর্মসূচি থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মতো নারী ও শিশুদের ধর্ষণসহ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান ঘোষণা ও বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচিতে এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, বছরের প্রথম ১০ মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হাজার ২৫৩ জন নারী। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৫১ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬২ জনকে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২০০ জনকে, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২২১ নারী এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০জন নারী। অন্যদিকে একই সময়ে ৭৬৭টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এছাড়া ১৩৫ শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
জোটের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।