চুয়াডাঙ্গা সীমান্তের শূন্য রেখায় বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা
২৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:০৪
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার ভারত সীমান্তের শূন্য রেখায় ভারতীয়দের পিটুনি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বিজিবি জানিয়েছে নিহত ব্যক্তি একজন চিহ্নিত চোরাকারবারী। তার বিরুদ্ধে বিজিবির করা মামলাও আছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান আব্দুল গনি (৩০)। তিনি চাকুলিয়া গ্রামের মালোপাড়ার আবু তাহেরের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের ঠাকুরপুর বিওপি এলাকার চাকুলিয়া গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্তে কড়া নজরদারীর মধ্যে বাংলাদেশের কয়েকজন চোরাকারবারী প্রতিদিনই অবৈধভাবে ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে গরু ও ফেনসিডিল পাচার করেন। রাতের আঁধারে তাদের চলাচলের কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ভীমপুর থানার হুদাপাড়া গ্রামবাসীর ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। তবে ওই চোরাকারবারীরা গ্রামবাসীকে ক্ষেতের ফসল নষ্ট করার জন্য ক্ষতিপূরণও দেন। গত বেশ কিছু দিন ধরে এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে চাকুলিয়া গ্রামের আবদুল গনি, বাবলু (২২) ও মিকার (৩৫) সঙ্গে হুদাপাড়া তাদের বিরোধ শুরু হয়। সবশেষ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতের কোনো একসময় চোরাকারবারীরা অবৈধভাবে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করলে গ্রামবাসী তাদের ওপর লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বাবলু ও মিকা পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও আব্দুল গনি ভারতীয় গ্রামবাসীর রোষে পড়েন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সীমান্তের ৮৭ নম্বর প্রধান খুঁটির শূন্য রেখা বরাবর ফেলে যায়। ঘটনাটি কাউকে না জানিয়ে মঙ্গলবার আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে বাবলু ও মিকা আহত আব্দুল গনিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহবার হোসেন জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই আব্দুল গনির মৃত্যু হয়েছে। তাই তারা ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠিয়ে দেন।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যমে সীমান্তবর্তী চাকুলিয়া গ্রামের চিহ্নিত চোরাকারবারী আব্দুল গনিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে যে খবর প্রচার হচ্ছে তা ঠিক নয়। প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে জানা গেছে, সেখানকার গ্রামবাসীর আক্রান্তের শিকার হয়ে সে মারা গেছে।’
নিহত গনির বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে বিজিবি অবৈধ ভারতীয় গরু ও ফেনসিডিল চোরাচালানের দায়ে মামলা করেছিল। তাকে অবৈধ ভারতীয় গরুসহ বিজিবি আটক করে মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।