হলি আর্টিজান মামলার শুরু থেকে শেষ
২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:০৭
ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, মামলার আরেক আসামি নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
এ রায়ের মাধ্যমে নারকীয় হামলার বিচারিক কাজের প্রথম ধাপ শেষ হলো। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর এক বছরে সর্বমোট ৫২ কার্যদিবসে মামলাটি সমাপ্তি ঘটে।
মামলার শুরু থেকে শেষ
২০১৮ সালের ১ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম (সিএমএম) আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। চার্জশিটে ২১ জন আসামির নাম থাকলেও তাদের মধ্যে ১৩ জন বিভিন্ন সময় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে মারা যায়।
২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলার বাদী এসআই রিপন কুমার দাসের মাধ্যমে প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচারিক কাজ শুরু হয়। প্রায় এক বছর পর গত ২৭ অক্টোবর মামলাটির রাষ্টপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এরপর গত ৩০ অক্টোবর আত্মপক্ষ শুনানিতে আট আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেয়।
এরপর গত ৬ নভেম্বর মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত ১৭ নভেম্বর। এরপর মামলাটি রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেন।
চাঞ্চল্যকর মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
এ মামলার মোট আসামি ৮ জন। এর মধ্যে ৬ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বাকী দুই আসামি মো. শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ প্রথমে পলাতক থাকলেও পরে গ্রেফতার হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ইতালির ৯ জন, জাপানের সাত জন, ভারতীয় একজন ও বাংলাদেশি দু’জন নাগরিক নিহত হন। রাতভর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটে। পরে সেখান থেকে পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার হয়। আর সাইফুলের সহকারী জাকির হোসেন শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
একই ঘটনায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের গ্রেনেডের আঘাতে রেস্তোরাঁর বাইরে মারা যান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান।