‘চাহিদার তিন গুণ ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে’
২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৩
ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)’র কাছে ৯ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে। এর বিপরীতে পিক সিজনে প্রতিমাসে দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা মাত্র ৩ লাখ মেট্রিক টন। সে হিসেবে চাহিদার চেয়ে ৩ গুণ ইউরিয়া সার দেশে মজুত রয়েছে। এছাড়া, আমদানির মাধ্যমে আনা সারও পাইপ লাইনে রয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে পর্যাপ্ত ইউরিয়া সারের মজুত রয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনের প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোট ৫০টি উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ৪৬টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ৩টি কারিগরি এবং ১টি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প রয়েছে। সবমিলিয়ে এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩০৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবিখাতে ১ হাজার ১৬৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্যখাতে ৫৬ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নখাতে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
সভায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। এ সময় চাষি পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত বিসিআইসি’র বাফার গুদাম নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়। এছাড়া বিকল্প উৎস থেকে চিনি উৎপাদন, চামড়া শিল্পের অনুকূলে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন অর্জন, গুণগতমান বজায় রেখে দ্রুত অবকাঠামো নির্মাণের স্বার্থে মনিটরিং জোরদার, স্বচ্ছতারভিত্তিতে দ্রুত অর্থ ছাড় ও ব্যয়, দরপত্র আহ্বান, কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন তদারকি, প্রকল্প পরিচালকদের প্রশিক্ষণ এবং প্রকল্প এলাকায় অবস্থান নিশ্চিতকরণসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় জানানো হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সাভার চামড়া শিল্পনগরির সিইটিপি নির্মাণ শেষ হবে। প্রকল্প সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ট্যানারি মালিকরা যাতে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারে, সে লক্ষ্যে মক-অডিটে প্রাপ্ত দুর্বলতাগুলো তাদেরকে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এসব দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি ট্যানারিগুলোতে পানির অপচয়রোধে ওয়াসার রেটে পানির ট্যারিফ ধার্য করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় শিল্পমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পুরোনো আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা পরিহার করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় অনেক দূর এগোলেও এখনও বাস্তবায়ন কাজে কাঙ্ক্ষিত গতি আসেনি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কর্মকর্তাদেরকে সেবক হিসেবে কমিটমেন্টের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
তিনি সারের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিকল্প যোগানের উৎস খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেন। নির্ধারিত সময়ে চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন অর্জনের বিষয়টি ট্যানারি মালিকদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।