Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টুপি এনেছেন কারাগার থেকেই, দাবি জঙ্গি রিগানের


২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৪২

– আপনার নাম কি?

– রাকিবুল হাসান রিগান।

-মাথায় কি এটা?

– এটা আইএস টুপি?

– এই টুপি কোথায় পেলেন?

– এটা কারাগার থেকে এনেছি।

হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায় দেওয়া হয় বুধবার (২৭ নভেম্বর)। ঢাকার দায়রা জজ আদালত ভবনে সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ওই রায় দেন। এতে আট আসামির মধ্যে সাত জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। দুপুরে ওই  রায়ের পরপরই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা  আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে একের পর এক বের হয়ে আসছিলেন। তার মধ্যে রাকিবুল হাসান রিগানকে দেখা যায় দুটি স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে এগিয়ে আসছেন। তার মাথায় একটি টুপি। যাতে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর লোগো রয়েছে। তখনই রিগানকে ঘিরে ধরেন সংবাদকর্মীরা। তখন তার সঙ্গে যে কথপোকথন হয় তাই উপরে তুলে ধরা হলো। তবে ততক্ষণে পুলিশের সদস্যরা ছুটে আসেন। এবং রিগানকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেন। ফলে টুপি সম্পর্কে আর বিস্তারিত কিছু জানতে পারেননি সাংবাদিকরা।

এরপরেই পুলিশ সদস্যরা ধাক্কা দিয়ে সকলকে সরিয়ে দেন এবং রিগানকে প্রিজন ভ্যানে তুলে নেওয়া হয়।

এর আগে রাকিবুল হাসান রিগানসহ আট জন আসামিকে যখন আদালতে আনা হয়, হাজতখানায় রাখা হয় কিংবা আদালতে হাজির করা হয় তখনও কারো চোখে পড়েনি আইএস’র লোগো লাগানো টুপিটি। কিন্তু বের হওয়ার সময় এমন একটি টুপি পরা দেখে সকলের মনেই প্রশ্ন জাগে। তবে রিগান সে প্রশ্নের জবাবে কেবল জানিয়েছেন, টুপিটি তিনি কারাগার থেকেই নিয়ে এসেছেন।

এতে প্রশ্ন জেগেছে কীভাবে রিগানের কাছে পৌঁছালো এমন একটি টুপি?

আর এই ঘটনা আবারো নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়। যা এরই মধ্যে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। মামলার রায়ের চেয়েও বেশি আলোচিত হচ্ছে এই টুপি নিয়ে। কী করে একজন আসামি এমন একটি টুপি নিয়ে আদালতে ঢুকতে পারলো সে প্রশ্ন সকলেরই।

বিজ্ঞাপন

তবে কেউ কেউ কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না এই প্রশ্নের। আইনমন্ত্রী, পুলিশ মহপরিদর্শককেও করা হয়েছে সে প্রশ্ন। উত্তরে তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বিষয়টিতে আলোচনা এতটাই দ্রুত গড়ায় যে দুপুরের পরপরই তথ্য আসে টুপির বিষয়ে তদন্ত করতে অ্যাডিশনাল আইজি প্রিজন্সকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায় উপলক্ষে আদালতে বুধবার ছিলো নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ আইনজীবীসহ সকলকেই তল্লাশির মাধ্যমে আদালতে ঢোকানো হয়।

আদালতের ভেতরে যারা ছিলেন, তাদের কেউ কেউ বলছেন, বিচারক রায় ঘোষণার পরপরই রিগান মাথায় ওই টুপিটি পরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদালতে উপস্থিত আসামি পক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আদালতে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের তোলা হয়েছে। টুপির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এটা পুলিশ ভালো বলতে পারবে।

আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার জাফর হোসেন বলেন, টুপির বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করলে জানা যাবে টুপি আদালতে কেউ সরবরাহ করেছে কিনা। অথবা এই টুপি কারাগার থেকে নিয়ে এসেছে কিনা সেটাও জানতে হবে।

সামান্য কথপোকথনে রিগান অবশ্য জানিয়েই দিয়েছেন টুপিটি তিনি কারাগার থেকেই নিয়ে এসেছেন। তবে রিগান সে বক্তব্য অস্বীকার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কেরাণিগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে পাঠানোর আগে সঠিকভাবে তল্লাশি করা হয়। এতে কোনো গাফিলতি বা ফাঁক-ফোঁকড় ছিল না। আমাদের ভিডিও ফুটেজ দেখলেও তল্লাশির বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া যাবে। যে টুপি নিয়ে কথা উঠছে, সেটির বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। ওখানে যে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন, তারা হয়তো বলতে পারবেন।’

বিজ্ঞাপন

এটি কারা কর্তৃপক্ষের নয়, পুলিশের বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আইএস টুপি জঙ্গি রিগ্যান রাকিবুল হাসান রিগ্যান

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর