Thursday 18 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যে কৃষি খামারে প্রতিদিনই মেলে ফল-ফসল


২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:৩২ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:৫৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চুয়াডাঙ্গা: সফল কৃষক জাবালুল বাশার সেলিম বিশ্বাস চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামে গড়ে তুলেছেন মিশ্র কৃষি খামার। খামারে রয়েছে থাই বারোমাসি আম (কার্টিমন) ও থাই পেয়ারা-৫। খামারের ভেতর ১০ বিঘা জমিতে সাথী ফসল হিসাবে বিভিন্ন ধরনের সবজি, তেল, মসলা জাতীয় ফসল আবাদ করেছেন। জমির এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে পুরোটাই এনেছেন উৎপাদনের আওতায়। তাই প্রতিদিনই এই খামারে মেলে কোনো না কোনো ফল বা ফসল।

মায়ের নামে তৈরি করা ‘জাহানারা কৃষি খামার’ এর জমি সম্পূর্ণ ঘেরার কাজে খামারি সেলিম বিশ্বাস ব্যবহার করেছেন ৩৭২টি সিমেন্টের খুঁটি। প্রতিটি খুঁটির পাশে রোপণ করেছেন ৩টি করে ড্রাগন ফলের কাটিং। খামারের চারপাশে দিয়েছেন তারের বেড়া, বেড়ার ধারে ২ ফুট পর পর শীতকালীন সবজি হিসেবে লাগানো হয়েছে টমেটোর চারা।

বিজ্ঞাপন

বাবা ওয়াছিফ আলীর সরকারি কৃষি খামারে চাকরির সুবাদে ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি আগ্রহ জন্মে জাবালুল বাশার সেলিমের। লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯৭০ সাল থেকে তিনি চাষাবাদ শুরু করেন। ধান, গম ও ভুট্টা চাষের পাশাপাশি গড়ে তোলেন নানান জাতের আম, লিচু ও কাশ্মিরি বরইয়ের খামার। বর্তমানে তিনি নিজের ও ইজারা নেওয়াসহ ২০০ বিঘা জমি এনেছেন খামারের আওতায়।

জাবালুল বাশার সেলিম জানান, ২৫ বছর আগে তিনি রুপালী জাতের আম্রপালি আম গাছ রোপণ করে শুরু করেছিলেন মিশ্র কৃষি খামার। প্রথমে ৬ বিঘা জমিতে আম্রপালি জাতের আম গাছ লাগানো হয়। সেখান থেকে প্রথম উৎপাদিত আম বিক্রি করে ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকায়। বর্তমানে এ খামারে ১ হাজারটি বারোমাসি আম থাই (কার্টিমন) ও ১ হাজারটি থাই পেয়ারা-৫ রয়েছে। জমি সম্পূর্ণ ঘেরার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৭২টি সিমেন্টের খুঁটি। প্রতিটি খুঁটিতে তারের বেড়ার সঙ্গে লাগানো হয়েছে ৩টি করে নানান জাতের ড্রাগন ফলের কাটিং। বেড়ার ধারে ২ ফুট পর পর দেওয়া হয়েছে টমেটোর চারা। এখন পর্যন্ত ৫০ টাকা কেজি দরে ২০০ কেজি থাই পেয়ারা বিক্রি করা হয়েছে, সামনে আরও বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া থাই বারোমাসি আম গাছে প্রচুর আম ধরেছে। ১৫-২০ দিনের মধ্যেই গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হবে। এ গাছগুলোতে বছরে ৩ বার আমের ফলন হবে। সেই সঙ্গে এই কৃষি খামারে সাথী ফসল হিসাবে রয়েছে ধান, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, পালংশাক, ছোলা, লাল শাক, মটরশুঁটি, হলুদ, মুলা, বেগুন, কাঁচামরিচ, আলু, গাজর, লিচু ও কাশ্মিরি আপেল কুল (বরই)। বিদেশি ফল এদেশে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ফলানো সম্ভব বলে জানান এই খামারি।

এ ধরনের পরিকল্পিত মিশ্র খামার থেকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফল-ফসল বিক্রি করা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মিশ্র খামারে এ পর্যন্ত ৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করা যায় আগামী বছরে ব্যয়ের ৭ লাখ টাকা বাদে ২০ লাখ টাকার ফল-ফসল বিক্রি করা যাবে।’

কৃষি শ্রমিক রবিউল, চতুর আলী ও চাঁদ আলী জানান, খামারের ফলের গাছ ও ফসল পরিচর্যার জন্য বর্তমানে ৫০-৬০ জন শ্রমিক কাজ করছে। এ কাজ করে তারা প্রতি মাসে ৭ হাজার ৫০০ টাকা আয় করছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন রাব্বী বলেন, ‘এই ফল বাগানে ৩৭২টি খুঁটি আছে। সেগুলোও কৃষক জাবালুল বাশার উৎপাদনের আওতায় এনেছেন। এ মিশ্র খামারে জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি ব্যবহার এবং আম গাছে ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহারের জন্য আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ ধরনের কৃষি উদ্যোক্তাকে আমরা উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি।’

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘মিশ্র কৃষি খামার করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। পর্যটন শিল্পেও কাজে আসছে। অনেকে এ ধরনের খামার দেখতে এসে উদ্যোগী হয়ে নিজেই বিনিয়োগ করে এ ধরনের খামার করছেন।’ এখানে উৎপাদিত ফল-ফসল যেন নিরাপদ হয় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

দূষিত নগরীর তালিকায় আজ ঢাকা ২৩তম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর