৫ ডিসেম্বর মানুষ সত্যটা জানবে: ফখরুল
৩০ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:০১
ঢাকা: আগামী পাঁচ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে দেশের মানুষ সত্যটা জানতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাঁচ ডিসেম্বরের মধ্যে উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে আদালতের।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’ আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এনডিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘ওনার স্বাস্থ্যের অবস্থা এতো ভয়ংকর এতো ভয়াবহ যে, এই মুহূর্তে তাকে ওখান থেকে বের করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। গতকাল একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলছিলাম, তিনি জানালেন, যে ড্যামেজ তার হচ্ছে সেটা আর ফিরে আসবে না। মধ্যে তার বাঁ হাত, বা সাইটটা প্যারালাইসট। কারো সাহায্য ছাড়া তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। অথচ তাদের সরকারি কর্মকর্তা পিজি পরিচালক বলছে বলছেন তিনি ভালো আছেন, আগের চেয়ে এখন ভালো। ধিক্কার দেই আমি, জ্ঞানহীন এই মানুষদের। যারা সত্যকে গোপন করে তাদের এখানে থাকার অধিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালত রিপোর্ট চেয়েছেন, এইদিন সারাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করবে তারা সত্য কথাটা বলবেন।’
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের জোট এবং আমরা কখনই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে চাই। এটা বারবার বলেছি এবং প্রমাণিত হয়েছে। সন্ত্রাসী তো এই সরকার, তারা এই পথে বাধা সৃষ্টি করছে। গত নির্বাচনে তারা সন্ত্রাস করে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এখনো সন্ত্রাস করে জোর করে মানুষকে দাবিয়ে রেখে তারা টিকে থাকতে চাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ তাদের অতীত ভুলে গেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী যিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার নাম তারা একবার উচ্চারণ করে না। একাত্তরের যুদ্ধে যিনি নেতৃত্ব দিলেন প্রবাসী মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন সাহেবের নাম নেয় না এখন কেউ। জেনারেল ওসমানী যিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন তার নামও এখন কেও উচ্চারণ করে না। কেউ উচ্চারণ করলে, তার খবর আছে। এটা হচ্ছে এদের মানসিক অবস্থা। কাউকে সহ্য করতে চায় না। অন্য কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কাজ করছে এটাকে তারা ধ্বংস করে দিতে চায়। তাদের মানসিকতার মধ্যে আছে জমিদারি ভাব। ‘লর্ড শিপ’ আমিই সব, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।”
২০ দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকে বলছেন এ প্রেস ক্লাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বক্তব্য করে কিছু হবে না। আমি আপনাদের বলছি আপনারা গ্রামে গ্রামে বাজারে বাজারে যান। কথাগুলো মানুষকে বলেন, মানুষকে সম্মিলিত করার চেষ্টা করেন। আমরা একটা সময় একটা চোঙ্গা মুখে নিয়ে বক্তৃতা করতাম। এ কাজগুলো করেন। এখন আমরা যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করি সার্বভৌমত্বকে বিশেষ করে আমাদের কাজ একটাই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। শুধু বিএনপির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আপনাদের দায়িত্বটা আপনাদের পালন করতে হবে। এখন সময় হচ্ছে ঐক্যের। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেয়ালের লিখনগুলো আপনারা পড়ুন। কোনো শাসক যদি দেয়ালের লিখন পড়তো, মানুষের চোখের ভাষা বুঝতো, মানুষের কথা বুঝতো, তাহলে এভাবে তারা অমানুষ হতে পারত না। আজকে কোনো সরকার আছে নাকি? কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। যার যা খুশি করছে।’
দেশে এখন সর্বত্র উৎসব চলছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আগামীতে জন্মোৎসব হবে, কার টাকায় করছেন? এটাতো পাবলিক ফান্ড। আপনারা জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। পেঁয়াজের দাম ২৪০ টাকা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি পেঁয়াজ খান না, সাথে আমাদের রাষ্ট্রপতিও একই কথা বলেছেন। আজ আমার স্ত্রীও বললেন আমি আর পেঁয়াজ কিনছি না। চালের দাম বাড়ায় আমাদের খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, মানুষ এখন শুধু চাল খাচ্ছে। তাই চালের ওপর চাপ পড়েছে। এগুলো শুধু বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে পরিহাস।’