Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশ সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে: ফখরুল


১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৫৭

ঢাকা: বাংলাদেশ সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ এ সেমিনারের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা দুর্বল—শারীরিকভাবে একটু দুর্বল, তারা সবচেয়ে বেশি অনিরাপদে আছেন। এখানে দুইমাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধা অথবা তরুণ যুবক, ভাই-বাবা— কেউ নিরাপদে নেই। কারণ, বাংলাদেশ একটি সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে প্রতিদিনই নারী-শিশু এবং দুর্বলের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে। আওয়ামী লীগের সব চেয়ে বড় অপরাধ- তারা এই দেশ ও সমাজকে দ্বিধা-বিভক্ত করে ফেলেছে। সমাজকে পুরোপুরিভাবে দুষিত করে ফেলেছে। আজ সবখানে বিভক্তি এবং সেই বিভক্তিটা ভয়ংকরভাবে সমাজের মধ্যে বিস্তার লাভ করেছে। এখন কেউ ভয়ে-ত্রাসে কথাও বলতে চায় না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পূর্বে অর্থাৎ স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে এ ধরনের একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। রক্ষী বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কথা বললেই তখন ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। নারী শুশুরাও বাদ পড়তেন না। সে সময়কার সেনসেশন কমিউনিস্ট নেতা শান্তি সেনের স্ত্রী, বৌ মা— তাদেরকে রক্ষীবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল।’

‘কিন্তু তখনও বিচার ছিল। বিচারক বেবেশ ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, যারা ভিক্টিম, তাদেরকে কোর্টে হাজির করা হোক। সরকার বাধ্য হয়েছিল হাজির করতে। নিজের প্রাইভেট চেম্বারে ভিক্টিমদের সঙ্গে কথা বলে দেবেশ ভট্টচার্য নির্যাতনের ফিরিস্তি শুনেছিলেন এবং ওই কোর্টেই তাদেরকে মুক্তি দিয়ে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে’— জানান মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এখন হাইকোর্টে যেতেই পারবেন না। সেখানে গিয়ে কোনো লাভও হবে না। কারণ, প্রধান বিচারপতিকে বন্দুক দেখিয়ে ঘাড় ধরে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেওয়ায় একজন বিচারককে প্রাণের ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। সেই দেশে আমরা কী করে আশা করি যে, মানুষ ন্যায় বিচার পাবে?’

‘জিয়াউর রহমান টেন্ডার দিয়ে রাজনীতিবিদদের নিয়ে এসছিলেন’— তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তার এই বক্তব্য আমাকে কিছুটা আঘাত করল বলে গুগোলে তার (তথ্যমন্ত্রী) প্রোফাইলটা বের করলাম। দেখলাম উনার জন্ম ১৯৬৩ সালে। অর্থাৎ জিয়াউর রহমান কী ছিলেন, কেমন ছিলেন, কী অবস্থার প্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় মানুষের পরিণত হয়েছিল, সেটা তার (ড. হাছান মাহমুদ) জানার কথা না।’

‘টাকা বানানো একটা ব্যধি’— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ রোগে তো আপনারাই বেশি আক্রান্ত হয়ে গেছেন। আপনার সোনার ছেলেরা— তাদেরকে এখন ধরে ধরে আনছেন, বলার চেষ্টা করছেন তোমরা এখন ভাল হয়ে যাও।’

সৌদি আরবে নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি এই কাজের বিরুদ্ধে বলছি না। অবশ্যই আমাদের নারীরা কাজ করবেন, মর্যাদার সঙ্গে কাজ করবেন। মর্যাদাহানী করে কাজ করবেন, এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমাদের সরকার যখন ছিল, তখন সৌদি আরব আমাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের নেত্রী তখন রাজি হননি।’

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, জাহানারা আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন নিপুণ রায় চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

টপ নিউজ বিএনপি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর