রোহিঙ্গাদের হাতে এনআইডি, আত্মসমর্পণের পর ইসির ২ কর্মী কারাগারে
১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেওয়ার মামলায় নির্বাচন কমিশনের দুইকর্মীকে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি উইংয়ের অধীনে প্রকল্পে কর্মরত আছেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) দুজন চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গণির আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রকল্পে কর্মরত দুজন হলেন- সাগর চৌধুরী ও সত্যসুন্দর দে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাগর চৌধুরী ও সত্যসুন্দর দে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রোহিঙ্গা এনআইডি সংক্রান্ত মামলার আসামি। তারা গত ২৯ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন। সেই জামিনের মেয়াদ শেষের পর হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী তারা আজ (রোববার) নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। একইসঙ্গে তারা জামিনের আবেদনও করেছিলেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।’
রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার কয়েকটি ঘটনা জানাজানির পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিনসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। বাকি দুজন হলেন জয়নালের বন্ধু বিজয় দাশ ও তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়া। জয়নালের হেফাজতে থাকা নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্সকৃত একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়, যেটি বিজয় ও সীমার কাছে রেখেছিলেন জয়নাল। ওই ল্যাপটপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি দেওয়া হত বলে অভিযোগ করা হয় জয়নালের বিরুদ্ধে।
ওই রাতেই ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাগর ও সত্যসুন্দরকেও আসামি করা হয়। আটক জয়নালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের মামলার আসামি করা হয়েছিল বলে এজাহারে উল্লেখ আছে।
মামরাটি বর্তমানে তদন্ত করছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। মামলায় সাগর ও সত্যসুন্দরসহ ১৩ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। গ্রেফতার বাকিরা হলেন- নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের কর্মী শাহনূর মিয়া, অস্থায়ী কর্মী মোস্তফা ফারুক, মো.শাহীন, মো.জাহিদ হাসান এবং পাভেল বড়ুয়া, চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মো. আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও অফিস সহায়ক নাজিম উদ্দিন এবং মীরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন।