দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে আসছে নতুন বিনিয়োগ
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৩
ঢাকা: বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ২.৬৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী একটি বেসরকারি সংস্থা।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা ক্লাবে ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘পর্যটন ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে একটি বেসরকারি সংস্থা ২.৬৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী৷ সেখানে তারা উন্নত মানের ফাইভ স্টার হোটেল, বিনোদন উপযোগী স্থান তৈরি করা, বিলাসবহুল কার পার্কিংসহ যোগাযোগ খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে চায়। সংস্থাটির সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে, খুব শিগগিরই চুক্তি হতে পারে।
তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা তৈরি করতে এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা আগামী ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন অর্থাৎ এই ১৮ মাসের মধ্যে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। এটি সম্পন্ন হওয়ার পর সেখানে থাকা স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দেশের পর্যটন উন্নয়নের স্বার্থে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটন মহাপরিকল্পনা অনুসারে কাজ করলে দেশে এ খাতের গুণগত ও আঙ্গিকগত পরিবর্তন হবে এবং তা আমাদের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়ক হবে। পর্যটন শিল্পের গুণগত পরিবর্তন আনতে কক্সবাজার ও সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় আমরা ‘এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন’ গড়ে তোলার জন্যে কাজ করছি। দেশের এই এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোনগুলোতে প্রচুর সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মাহবুব আলী বলেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি অংশীজনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে আমাদের অংশীজনের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে হোটেল-মোটেল,রিসোর্ট, ইকোপার্ক, থিমপার্ক সহ পর্যটনের নানা অনুষঙ্গ গড়ে উঠছে। পর্যটন শিল্পকে ঘিরে যত বেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে ততবেশি আমাদের দেশীয় তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে।
তিনি বলেন, মামার বাড়ি বা শ্বশুর বাড়ি বেড়ানো ছাড়া আগে বেড়ানোর কনসেপ্ট ছিলনা। বর্তমানে দেশে প্রচুর বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। ট্যুরিজমকেও মানুষ নতুনভাবে বুঝতে শিখেছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস বলেন, পর্যটন শিল্প উন্নয়নের সাথে সাথে অর্থনীতির চাকাও ঘুরতে থাকে। পর্যটন শিল্পে অনিবার্যভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। এ শিল্পের চাইতে আর কোন শিল্পে এত বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনা।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকার প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সে সঙ্গে বিদেশে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে সারাবাংলা ডটনেট ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, দেশের সবচেয়ে ডায়নামিক খাত পর্যটন। দেশের জনসংখ্যার সবচেয়ে বেশি সংখ্যা তরুণ-তরুণী। তরুণদের পর্যটন খাতে আসতে আরও বেশি আগ্রহী করে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ট্রিয়াবের সভাপতি খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেই পর্যটন খাতে সবচেয়ে কর্মসংস্থান রয়েছে৷ খাতটিতে আমাদের এখন প্রধান দরকার দক্ষ জনশক্তি। বিনামূল্যে স্কিল ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের আরও বেশি সহযোগিতা দরকার। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন রিসোর্ট রয়েছে, তাদের বিভিন্ন সমস্যাও রয়েছে, তা সরকারের পক্ষ থেকে দূর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আটাবের সভাপতি এস এম মঞ্জুর মোর্শেদ, টোয়াবের সভাপতি রাফিউজ্জামান, টিডাবের সভাপতি সৈয়দ হাবিব আলী, বিডি ইনবাউন্ডের সভাপতি রেজাউল ইকরাম রাজু, অরনিমা রিসোর্টের এটিএফজেএফবি’র সভাপতি নাদিরা কিরণ সহ অন্যান্যরা।