‘বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার খাবার অপচয় হয়’
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৮
ঢাকা: ‘দেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষ এখনও যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য পাচ্ছে না, অথচ উৎপাদিত খাদ্যের ৩০ শতাংশই বিভিন্নভাবে নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হওয়া খাদ্যের আর্থিক মূল্য বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। ফলে এ অপচয় রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। অপচয় রোধে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি চালাতে হবে প্রচার ও প্রচারণা।’
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) ‘খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে খাদ্য অপচয় রোধের গুরুত্ব ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিসেফ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, কৃষি সাংবাদিক ফোরাম ও হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে ৪ কোটি মানুষ আর সারা পৃথিবীতে ৮২ কোটি মানুষ যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য পাচ্ছে না । অথচ সারা পৃথিবীতে উৎপাদিত খাদ্যের এক তৃতীয়াংশ অপচয় হয়, এর পরিমাণ ১৩০ কোটি টন। ধানের ক্ষেত্রে উৎপাদন পরবর্তী ক্ষতি ১০ শতাংশ, গমের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ও শাক-সবজির ক্ষেত্রে ১০ থেকে ৪২ শতাংশ। উৎপাদন স্তরে ইঁদুর প্রতিবছর নষ্ট করে ৭৩২ কোটি টাকার ফসল। দেশে পোকা, রোগ ও আগাছার কারণে নষ্ট হয় ২০ শতাংশ ফসল।
বক্তারা জানান, দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার। প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন। দেশে প্রতি ৫ জনে ১ জন মানুষ প্রায় দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রাম, চরাঞ্চল, দলিত, আদিবাসী এবং বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টিহীনতা বেশি।
খাদ্য অপচয় রোধে করণীয় প্রসঙ্গে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অপচয় রোধে ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের স্মার্ট হতে হবে। খাদ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে হতে হবে যত্নশীল। সামাজিক অনুষ্ঠানে খাদ্য অপচয়ের ক্ষেত্রে হতে হবে সচেতন। এজন্যে অনেক বেশি প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন। প্রাথমিক বিদ্যালয় অর্থাৎ শিশু অবস্থা থেকেই মানুষকে খাদ্য অপচয় রোধে সচেতন করতে হবে।
সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রউফ, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবির, বিসেফ ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি সৈয়দ মনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা।