Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘উসকানি-নীলনকশা ব্যর্থ করে বিজয় আনুন’


১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:১৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারের ‘উসকানি’ ও ‘নীলনকশা’ ব্যর্থ করে দিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিজয় ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

তৃতীয় দফায় ঘোষিত তিনদিনের কর্মসূচির প্রথম দিন শনিবার সকালে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধনকালে দলটির শীর্ষ নেতারা এ আহ্বান জানান। নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন তারা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপির চলমান ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি প্রসঙ্গে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন ‘সক্ষমতা নেই তাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সসম্পাদকের এই বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,  ‘সরকারের যে উসকানি, সরকারের যে নীলনকশা তাকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের বিজয়কে তরন্বিত করুন।’

‘আমরা অনুরোধ করব আমাদের দলের নেতা-কর্মীদেরকে, আপনারা শান্তিপূর্বণভাবে ধৈয ধরে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করুন। কখনো ধৈযহারা হবেন না। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচিগুলোও শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে। সমগ্র দেশের নেতা-কর্মীদের কাছেও আমরা এই আবেদন রাখতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন, তাকে মুক্ত করবার জন্য আমরা যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছি, এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন যেন ব্যাঘাত না হয়। আপনারা সবাই শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে এটাকে সফল করবেন’— বলেন ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তৃতীয় দফায় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার শুরু হওয়া গণস্বাক্ষর অভিযান চলতে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ বল প্রয়োগ করে, বে-আইনিভাবে একটি মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাবাগারে আটক করে রেখেছে। সেই কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করবার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার জন্য মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে চলছি।’

‘সেই আন্দোলনের এ পর্যায়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই অভিযান চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত না দেশনেত্রী কারাগার থেকে বেরিয়ে আসবেন ততোদিন পর্যন্ত। আজ কেবল এর সূচনা মাত্র।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা বহুবার বলেছি এই অবৈধ অনৈতিক সরকার সম্পুর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণের কোনো সমর্থন তাদের প্রতি নেই। তারা তাই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের সেই পুরোনো যে আশা, পুরোনো যে অভিপ্রায় এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা— ভিন্ন লেবাসে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে।’

সরকার যে ফ্যাসিস্ট কায়দায় টিকে থাকতে চাইছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের ওপর চড়াও হয়ে, তাদের সকল অধিকার চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে, অত্যাচার-নির্যাতন করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। কিন্তু টিকে থাকা তাদের পক্ষে কোনো দিনও সম্ভব হবে না— ইতিহাস তা বলে না। জনগণের স্বোচ্ছার প্রতিরোধের মুখে এবং প্রতিবাদের মুখে এই সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে।’

সবাইকে রাজপথে বেরোনোর আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের সব চেয়ে সংকটময় মুহূর্ত আমরা অতিক্রম করছি। এই দেশের স্বাধীনতা থাকবে কিনা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কিনা? গণতন্ত্র থাকবে কিনা?— আজকে সেই প্রশ্ন উঠছে।’

বিজ্ঞাপন

‘আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত চেতনাকে জাগ্রত করুন। সবাই বেরিয়ে আসুন। প্রতিবাদে স্বোচ্চার হোন এবং রাজপথে প্রতিবাদ করুন। আজকে যে গণস্বাক্ষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি এটাকে সফল করার জন্য যারা দেশনেত্রীকে ভালবাসেন, মুক্তি চান তাদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করুন— বলেন বিএনপির মহাসচিব।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকে আমরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করলাম।

‘সরকারকে বলতে চাই, ওয়ান ইলেভেনের পর মাইনাস টু করার জন্য যারা চেষ্টা করেছিল, তারা ব্যর্থ হয়েছে এবং ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। বর্তমানে আপনারা যারা মাইনাস ওয়ান করার চেষ্টা করছেন, তারাও ব্যর্থ হবেন এবং ইতিহাসের আস্তকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন’— বলেন মোশাররফ।

তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আগামী নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবো। খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে আমরা নির্বাচনের চিন্তা করছি না।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন সক্ষমতা নেই বলে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, সরকারের উসকানিতে কান দেবে না বিএনপি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা চেষ্টা করছে বিএনপির গায়ে অশান্তির তকমা লাগাতে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে সে প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু আমরা কোনো সহিংস আন্দোলনে যাব না। কারো উসকানিতে কান দেব না। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় ছিনিয়ে আনব।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শামা ওবায়েদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু,  সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বেবী নাজনীন, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক সিকদার, আমিনুল ইসলাম সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।

সারাবাংলা/এজেড/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর