Saturday 21 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বুড়িগঙ্গা পরিষ্কার রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য: হাইকোর্ট


৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৫

ঢাকা: বুড়িগঙ্গার পানিতে ঢাকা ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য ফেলার বিষয়ে দুই ধরনের প্রতিবেদন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওয়াসার এমডিকে শো-কজ ছাড়াও ‘বুড়িগঙ্গা পরিষ্কার রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য, এটা পরিষ্কার রাখার জন্যই আমরা পদক্ষেপ নেব’—বলেও মন্তব্য করেছেন।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার বর্জ্য পয়ঃনিষ্কাশন নিয়ে এক মামলার শুনানির সময় বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

শুনানির সময় আদালত ওয়াসার আইনজীবীকে বলেন, ‘একবার বললেন কোনো লাইন নেই। আবার বলছেন ১৬টি আছে। আপনাদের কোন রিপোর্ট সত্য। আদালতে কেন অসত্য রিপোর্ট দিলেন। অসত্য তথ্য দেওয়া ফৌজদারি অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য।’

সোমবার ওয়াসার পক্ষে লিখিত জবাব দাখিল করেন ব্যারিস্টার এ এম মাছুম। তবে তিনি আদালতে না থাকায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারপক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন তারই জুনিয়র অ্যাডভোকেট নাহিয়ান-ইবনে-সুবহান। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম। আর আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এরআগে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরাণীগঞ্জের চর রঘুনাথপুর, কামরাঙ্গীরচর, জিনজিরা, সদরঘাট, ওয়াইজঘাট, বাদামতলী, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, শামপুর, কদমতলী, ফতুল্লা, ধালাইখাল, মিলব্যারাক, ফরিদাবাদ, গোসাইবাড়ি, মিলব্যারাক মাজার, লালবাগের সোয়ারীঘাট ও নলখোলা এলাকায় ৫০টি স্থান দিয়ে ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে দূষিত বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় ফেলা হচ্ছে।

কিন্তু ওয়াসার আইনজীবীর স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার সুয়ারেজ লাইন দিয়ে বুড়িগঙ্গার কোথাও বর্জ্য ফেলা হয় না।

বিজ্ঞাপন

এই দুই প্রতিবেদন দেখার পর গত ১৭ নভেম্বর ওয়াসার এমডিকে শোকজ করেন হাইকোর্ট।

শোকজ নোটিশ আদালতের আদেশ অমান্য করা এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডির একটি জবাব হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। তাতে বলা হয়, ২০১১ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায় যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তার জবাবের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানকে দেওয়া একটি চিঠিও তুলে ধরা হয়।

সেখানে বলা হয়, আপনাদের প্রতিবেদনে দাবি করা ওয়াসার ৫৮টি সুয়ারেজ লাইন বুড়িগঙ্গা নদীতে মিশেছে সেই সুয়ারেজ লাইনের আউটলেট-উৎসমুখ ঢাকা ওয়াসা ও বিআইডব্লিউটিএর প্রতিনিধিদের সরেজমিনে যৌথ পরিদর্শনে দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

এই প্রতিবেদন দেখে আদালত বলেন, এটাতো শুভংকরের ফাঁকি। দায়িত্ব এড়ানোর জন্য এ ধরণের প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

শুনানিতে আদালতে অসত্য প্রতিবেদন দেওয়ায় ওয়াসার দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তবে শুনানিকালে ওয়াসার মূল আইনজীবী না থাকায় আদালত ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আদেশের জন্য রাখেন।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর