Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস আজ


৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪০

ঢাকা: আজ ৩ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার ও উন্নতি সাধন নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। তবে দেশের প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার অর্জনে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস’ পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অভিগম্য আগামীর পথে’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে কাজ করে যাওয়া বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য চেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাসের (বি-স্ক্যান) সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় এক যুগ হতে চললো বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদ অনুস্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এতে প্রতিবন্ধী মানুষদের ভাগ্যের তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। বিশেষ করে যারা দারিদ্রসীমার নিচে বাস করছে।’

তিনি বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অভিগম্য আগামীর পথে’। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী মানুষের শিক্ষা গ্রহণের সংখ্যা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও চাকরি বাজারে দেখা যায় অনেকেই যোগ্যতা অনুযায়ী টিকে থাকতে পারছে না। চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় স্বল্প মাত্রার প্রতিবন্ধী মানুষদের খোঁজা হচ্ছে। অর্থাৎ মানুষ এখনো জানে না কিভাবে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষের সাথে চলাচল করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তি দিচ্ছে, ভাতার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেবা গ্রহণের পথ এখনো সুগম হয়নি। তবে শিক্ষা উপবৃত্তি মোবাইলের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে যেটা ভাল উদ্যোগ। এছাড়া প্রতিবন্ধী শনাক্ত করণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রিতা। আর সেই দীর্ঘসূত্রিতার প্রভাব পড়ে ভাতা গ্রহণেও।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনসিসি) ২০১৭ এখনো মানা হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে এখনো প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্যতার অভাব সর্বত্র কারণ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মানছে না কেউ। তার জন্য কোনো শাস্তির ব্যবস্থাও দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া গণপরিবহন ব্যবস্থা এখনো এখনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব নয়। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বৈষম্য বিরাজমান। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে একটি ধোয়াশা তৈরি করে রাখা হয়েছে, প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য কোটা ব্যবস্থার আলাদা বাস্তবায়ন নেই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অধিকার ও সুরক্ষা আইনের কমিটিগুলো কার্যকর হচ্ছে না। যার কারণে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার অর্জনে কোনো অগ্রগতি নেই।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইপনা সেন্টার ছাড়া বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথকভাবে সরকারি কোনো চিকিৎসাকেন্দ্র নেই। স্বল্প পরিসরে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হলেও এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া আছে যাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাধারণ রোগীদের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে না হয়। কিছু হাসপাতালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য স্পিচ থেরাপি ও অ্যাকুপেশনাল থেরাপির ব্যবস্থাও রয়েছে যা ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে।

এ দিকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হবে বাংলাদেশে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিবসটি উপলক্ষে আজ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ছাড়াও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এ উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে আজ প্রগতি সরণির ডিফারেন্ট ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং ফ্রি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে থাকায় দিবসটির মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে ৫ ডিসেম্বর। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করবে মিরপুরের প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।

৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর