ভিড়ের মধ্যে আইএসের টুপি পেয়েছি: রিগ্যান
৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:১৯
ঢাকা: ভিড়ের মধ্যে অপরিচিত একজন ব্যক্তি আইএসের লোগো যুক্ত টুপিটি দিয়েছে বলে জানিয়েছে হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যান। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতে হাজিরের পর এ তথ্য জানায় সে।
আদালতে হাজিরের পর আইএসের টুপির বিষয়ে রিগ্যানের কাছে জানতে চান আদালত। এ সময় রিগ্যান জানায়, ‘ভিড়ের মধ্যে অপরিচিত একজন তাকে টুপিটি দিয়েছে।’
কল্যাণপুর জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের মামলার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এ মামলার আসামি ১০ জন। এর মধ্যে এক আসামি হলি আর্টিজানে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রিগ্যান। রিগ্যানসহ এই মামলার ৯ জন আসামি কারাগারে আছেন। আরেক আসামি পলাতক আছে। আদালত পলাতক আসামি আজাদুল কবিরাজকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামি ১৯ ডিসেম্বর মামলাটি পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
আইএস টুপি: সন্দেহের তালিকায় ভুয়া আইনজীবী
কারাগার থেকেই আইএস টুপি এনেছিল রিগ্যান: ডিবি
জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি: কারা কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি
আইএসের টুপি কারাগার থেকে আসেনি: তদন্ত কমিটি
আইএসের টুপি: কারও গাফিলতি আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে
টুপি এনেছেন কারাগার থেকেই, দাবি জঙ্গি রিগানের
এই মামলার শুনানিতে আসা রিগ্যানের কাছে আইএস এর টুপি নিয়ে জানতে চান বিচারক। জিজ্ঞেস করেন, আইএসের মনোগ্রাম সম্বলিত টুপি কই পেলেন? তখন রিগ্যান বলেন, ভিড়ের মধ্যে একজন টুপিটি দিয়েছে। বিচারক জানতে চান, কে দিয়েছে? রিগ্যান বলে, আমি চিনি না। তখন বিচারক বলেন, টুপিটি নিলেন কেন? কালেমা শাহাদাত লেখা ছিল, ভালো লাগায় টুপিটি নিয়েছি। বিচারক বলেন, আর কাউকে কি টুপি দিয়েছিল? তখন রিগ্যান বলে, না আর কাউকে দেয়নি। প্রিজন ভ্যানে ওঠার পর রাজীব গান্ধী আমার টুপিটি নিয়ে পড়ছে।
এর আগে গত ১৮ জুলাই কল্যাণপুর জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক দশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ওইদিন সঙ্গে আজাদুল কবিরাজ নামের পলাতক এক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
মামলায় চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলেন- সালাহ্ উদ্দিন কামরান (৩০), রাকিকুল হাসান রিগ্যান (২১), আব্দুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩) ও হাদিসুর রহমান সাগর (৪০)। এদের মধ্যে ৯ আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। শুনানিকালে এদিন তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এছাড়া এই মামলায় থেকে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। গত ৯ মে মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে বলে আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে ‘জাহাজ বিল্ডিংয়ে’ জঙ্গি আস্তানায় রাতভর অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এক ঘণ্টার ওই অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত ও একজন আহত হন। তারা সবাই জেএমবি সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই ঘটনার দুদিন পর মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. শাহ জালাল আলম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়।