Thursday 12 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিশর-তুরস্ক-চীন-পাকিস্তানের পেঁয়াজের চাহিদা নেই, কমছে না দাম


৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ২৩:৫২ | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: বাজারে বিভিন্ন দেশের পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও ক্রেতাদের  প্রথম পছন্দ দেশি পেঁয়াজ। এর পরই পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভারত ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ। ফলে এই তিন দেশের পেঁয়াজের দাম এখনো ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে মিশর, চীন, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে আসা পেঁয়াজের চাহিদা তেমন না থাকায় কমছে না পেঁয়াজের দাম, বরং প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে বাংলাদেশ ও ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে। তবে মিয়ানমারের পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে। এটি দেখতে ও স্বাদে অনেকটা দেশি কিংবা ভারতীয় পেঁয়াজের মতো। ফলে বাংলাদেশ ও ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি মিয়ানমারের পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাজধানীর বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মিশর, চীন, তুরস্ক, পাকিস্তানি পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকলেও তাতে ক্রেতাদের আগ্রহ কম। ফলে এই চার দেশের পেঁয়াজের দামও তুলনামূলকভাবে কম।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিশরীয় ও চায়না পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। অন্যদিকে তুরস্কের পেঁয়াজ ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এই চার দেশের পেঁয়াজ আকারে বেশ বড় হওয়ায় এসব পেঁয়াজ সহজে পচে যাচ্ছে। এতে করে অনেক খুচরা বিক্রেতা লোকসানেরও অভিযোগ করেছেন। আবার কেউ কেউ পচে যাওয়া পেঁয়াজের লোকসান এড়াতে বাকি পেঁয়াজে লাভ করছেন একটু বেশিই।

মতিঝিল কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুল জলিল সারাবাংলাকে বলেন, মিশর, তুরস্ক ও চায়নার পেঁয়াজ আকারে বড়। গড়ে পাঁচ থেকে ছয়টিতে এক কেজি করে হয়। কিন্তু দেখা যায়, প্রতি পাঁচ থেকে ছয়টি পেঁয়াজে একটি নষ্ট হচ্ছে। এতে করে প্রতি কেজি পেঁয়াজের কেনা দাম ২০ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। তাই পাইকারি দামের চেয়ে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে খুচরা বিক্রি করছেন কেউ কেউ।

পেঁয়াজ কেনার স্লিপ দেখিয়ে আবদুল জলিল বলেন, শ্যামবাজার থেকে আমরা পেঁয়াজ কিনে আনি। সেখান থেকে বাছাই করে পেঁয়াজ কেনার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু ক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে বাছাই করে কিনতে চায়। খুচরা ক্রেতারা একটা পেয়াঁজ একটু নরম হলেও নিতে চায় না। ফলে পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ করা যাচ্ছে না।

মতিঝিলের এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, গতকাল (সোমবার) শ্যামবাজারের আলমগীর ট্রেডার্স থেকে আমি ভারতীয় পেঁয়াজ কিনেছি ১৯৮ টাকা কেজি দরে, মিশরীয় পেঁয়াজ ১২২ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ কিনেছি ২৩২ টাকা কেজি দরে। এর সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচ। এরপর পচে যাওয়া পেঁয়াজ বাদ দিলে গড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম আরও ১০ টাকা বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, আজ খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ২৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ২৫০ টাকা এবং মিশরীয় পেঁয়াজ ১৩০ টাকা করে বিক্রি করছি। তবে আজ পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। তবে আমি আগের কেনা দাম ধরে সামান্য লাভে বিক্রি করছি।

অন্যদিকে শ্যামবাজার পেঁয়াজ রসুন সমিতির প্রচার সম্পাদক আড়তদার মো. শহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, মঙ্গলবার মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১৫০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ ৯৫ টাকা ও মিশরীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমার আড়তে দেশি বা ভারতীয় কোনো পেঁয়াজ নেই। তবে মিয়ানমারের পেঁয়াজ দেখতে অনেকটা দেশি পেঁয়াজের মতো। ফলে অনেকে এটাকে দেশি পেঁয়াজ বলে বিক্রি করছে।

শ্যামবাজারের আরেক আড়তদার মোবারক হোসেন বলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে আমার আড়তে দেশি ও ভারতীয় কোনো পেঁয়াজই নেই। তবে নতুন দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে ভারত সরকার প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ২৫০/৩০০ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ৮৫০ মার্কিন ডলার পুনঃনির্ধারণ করে দেয়। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পুরোপুরি পেয়াঁজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে। এতে করে দেশি পেঁয়াজের দাম গত আড়াই মাসে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়।

উল্লেখ্য, বর্তমান প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৭৬ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ৩০ শতাংশ নষ্ট হয় বলে উৎপাদনের পরিমাণ চাহিদার কাছাকাছি হলেও পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

দেশি পেঁয়াজ পেঁয়াজ পেঁয়াজের চাহিদা পেঁয়াজের দাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর