অনিয়ম রোধে কঠোর হচ্ছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন
৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:০২
ঢাকা: প্রশাসনিক কাজে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরই মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ফাইলিং ও এফিডেভিট শাখা থেকে ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি জনাকীর্ণ আদালতে দুর্নীতিবাজদের সতর্ক করেন। এদিকে তার নেওয়া এই সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জানিয়েছেন আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
সূত্র জানায়, দেশের সর্বোচ্চ আদালতেও ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। মামলা করা থেকে শুরু করে আদেশের কপি পাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি পদে ঘুষ লেনদেন হয়। বিষয়টি সবাই জানেন, কিন্তু কেউ মুখ খোলেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, বিচারপ্রার্থী টাকা না দেওয়া পর্যন্ত মামলা ফাইল পড়ে থাকে। ফাইলিং সেকশন থেকে বের হয় না। এরপর শুনানির জন্য কার্য তালিকায় আসতে টাকা দিতে হয়। আদেশের কপি পেতেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ দিতে হয়।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্য নির্বাহী সদস্য শামীম সর্দার সারাবাংলাকে বলেন, একই সঙ্গে একটি কোর্টে যদি দু‘টি আদেশ হয়, একটি কপি সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায়। অন্যটি ১৫ দিনেও পাওয়া যায় না। টাকা দিলে তবেই মেলে আদেশের কপি।
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সারাবাংলাকে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে শুরু করে যে জায়গায় আপনি কাজ করতে যাবেন, এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে টাকা দিতে হবে না। এটাই বাস্তবতা।
তিনি বলেন, কেউ কেউ আছেন যারা বিচারপতির নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি করছেন। কেউ আবার বিচারপতির স্বজনদের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি করছেন।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ঢুকে যায়, তখন কতগুলো পদক্ষেপ নিতে হয়। তাই প্রধান বিচারপতি গতকালও বলেছেন, তিনি কঠোর হস্তে এগুলোকে দমন করার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, এ বদলিগুলো তারই একটি অংশ।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, প্রধান বিচারপতিকে আরও শক্ত হাতে এটা দমন করতে হবে।
হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, গত ১ ও ২ ডিসেম্বর ফাইলিং ও এফিডেভিট শাখা থেকে ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভিন্ন শাখায় বদলি করা হয়েছে। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এটি চলমান থাকবে।
রাষ্ট্রপতির পরামর্শে গত ২২ আগস্ট তিনজন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।