উন্নয়নের নামে নদী ইজারা নিলেও বাস্তবতা ভিন্ন: পরিকল্পনামন্ত্রী
৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৩
ঢাকা: উন্নয়নের নামে নদী ইজারা নেওয়া হলেও এর বাস্তবতা ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অযথা ইজারা দিয়ে সাধারণ মানুষের মাছ খাওয়া বন্ধ না করার পক্ষেও মত তার।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, নদী, নালা, খাল-বিলসহ বিভিন্ন ধরনের জলাশয় যে উদ্দেশ্যে ইজারা দেওয়া হয়, তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাহলে কেন ইজারা দিয়ে সাধারণ মানুষের মাছ খাওয়া বন্ধ করা হবে।
এম এ মান্নান বলেন, ‘সরকার ইজারা দেয়। যে উদ্দেশ্যে ইজারা দেওয়া হয়, আসলে সেটা কি করা হয়? বলা হয়, উন্নয়ন করা হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য চার থেকে পাঁচ বছর বিভিন্ন জলাশয় ইজারা দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার হল, উন্নয়নের জন্য আমাদের টাকায় মাটিও কাটা হয় মাছ চাষের জন্য। আসলে ওই কাজটাও করা হয় না।’
‘তাহলে কেন আমরা ইজারা দিয়ে সাধারণ মানুষের মাছ খাওয়া বন্ধ করব। আমি ইজারা না দেওয়াকে পুরোপুরি সমর্থন করি। আশা করি, সরকারের উচ্চ মহলেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে’। যোগ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট বেলায় মাছ ধরে খেয়েছি। আমাদের পূর্বপুরুষেরাও খেয়েছে। সেই মাছ খেয়ে আমিষের যে প্রয়োজন, সেটা মিটেছে। এখন আমরা সেই বড় জাল দিয়ে মাছ ধরতে পারি না। নদীর যে অধিকার, যে দান, তা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে এক ইঞ্চি নদীর জমি দখল করে যেন উন্নয়ন কাজ না করা হয়, সেই আহ্বান জানান আলোচকরা। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যেসব কাজ করি, তার কিছু সরাসরি নদী, পানি ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত। সবাইকে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া দরকার যে, যারা প্রকল্প তৈরি করছেন, তারা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সময় পুরো পরিবেশ বিশেষ করে নদী, খাল, নালা, বিল, জলাশয় ইত্যাদির ওপর কোনো বিরুপ প্রভাব পড়বে না তার নিশ্চয়তা দেবেন। নিশ্চয়তা শুধু তারা কথায় কথায় দেবেন না। কীভাবে তারা নিশ্চয়তা দিচ্ছেন, সেটাও তারা বলবেন। তারা সেখানে গিয়েছিলেন, খোঁজ-খবর নিয়েছেন, বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলবেন, পণ্ডিতদের বুদ্ধি নিয়েছেন, তারপর তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এ সময় আরও কথা বলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য মনিরুজ্জামান, প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি মো. আনোয়ার সাদতসহ অনেকে।