‘রোহিঙ্গায় ৩৮২৯ কোটি টাকার সমপরিমাণ বনভূমি-জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি’
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৬
ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ক্যাম্প নির্মাণের ফলে প্রায় ৬ হাজার ১৬৪ একর সংরক্ষিত বনভূমি (যার স্থানীয় হিসাবে মূল্য প্রায় ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা) উজাড় হওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকার সমপরিমাণ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) উদ্যোগে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’, শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। টিআইবি‘র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এই কাজের গবেষণা উপদেষ্টা ছিলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত হওয়ায় স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তা/রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বহুমুখী প্রভাব ও ঝুঁকি বিদ্যমান। পরিবেশগত ঝুঁকির ক্ষেত্রে ভূমিধস, বন উজাড়, খাবার পানির সংকট এবং বন্যপ্রাণীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব উল্লেখযোগ্য।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাতটির মতো সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে: টিআইবি
ক্যাম্পে বসবাসরত পরিবারগুলোর দৈনন্দিন রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠের প্রাথমিক উৎস হিসেবে ৭ লাখ ৫০ হাজার কেজি কাঠ এবং বিভিন্ন গাছের শিকড় সংরক্ষিত বন থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলনে (২০১৯) কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ক্যাম্প নির্মাণের ফলে প্রায় ৬ হাজার ১৬৪ একর সংরক্ষিত বনভূমি, যার স্থানীয় হিসাবে মূল্য প্রায় ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা, উজাড় হওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকার সমপরিমাণ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হাতির চলাচলের পথ নষ্ট হওয়াসহ বন্যপ্রাণীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বন নিধনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে কক্সবাজার জেলার পুরো বনাঞ্চল, হাতি এবং অন্যান্য জীবজন্তুদের আবাসস্থল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১৫ মিলিয়ন ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হয়। অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের ফলে উখিয়া ও টেকনাফে পানির সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
উল্লেখ্য, টেকনাফ এলাকায় ৬০০ ফুট বা ১০০০ ফুট গভীরতার টিউবওয়েলগুলোতেও পানির সংকট তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজার কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প টিআইবি টিআইবির প্রতিবেদন