চেয়ারম্যান থাকছেন কাদেরই, জাপা মহাসচিব পদে আসছে নতুন মুখ!
৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:২৯
ঢাকা: আসছে জাতীয় কাউন্সিলে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। বর্তমান পদে থেকেই বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করতে চান তিনি। ফলে কাউন্সিল হলেও তাতে জাপা চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরই থেকে যাচ্ছেন— এটা অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন দলটির দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা। তবে মহাসচিব পদটি সম্ভবত ধরে রাখতে পারছেন না মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, আসন্ন কাউন্সিলে দলটির মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বেশ কয়েকজন। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতার এ সুযোগ থাকলে জাপা মহাসচিব পদ থেকে বিদায় নিতে হবে রাঙ্গাঁকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির কাউন্সিল অধিবেশনে মহাসচিব পদে জিয়া উদ্দিন বাবলু এগিয়ে রয়েছেন। তবে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাচ্ছেন দলটির সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ। বর্তমান মহসাচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁও রয়েছেন এই দৌড়ে। তবে অনেকের মতে, অদৃশ্য কোনো শক্তির হস্তক্ষেপ না থাকলে জাপা মহাসচিব হিসেবে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারই মনোনীত হবেন। যদিও সূত্র বলছে, জাতীয় পার্টির সঠিক নেতৃত্ব দলের শীর্ষ নেতারা দিতে পারেন না। নেতাদের হাত-পা বাঁধা। অদৃশ্য শক্তি থেকে দলের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত আসে।
কাউন্সিল দলের শীর্ষ দুই পদের নির্বাচন প্রসঙ্গে দলটির বর্তমান মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, ‘মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। তবে চেয়ারম্যান পদে জি এম কাদের ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী নেই। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরই থাকছেন।’
রাঙ্গাঁ আরও বলেন, ‘রওশন এরশাদ দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান হিসেবে থাকছেন। তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা তো আছেনই। তবে দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া হবে। এমনকি এখনও যেকোনো সিদ্ধান্ত তার সঙ্গে পরামর্শ করেই নেওয়া হয়।’
জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মহাসচিব হতে চাই না। মহাসচিব হওয়ার বিষয়ে কে কী বলছে, সেটা আমার দেখার বিষয় না।’ পার্টির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে চাই না।’
‘জাপার মহাসচিব পদে কে আসছেন?’— এমন প্রশ্ন করা হলে জাপার এক ভাইস প্রেসিডেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মহাসচিব পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই নতুন মুখ হতে পারেন জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু।’ পার্টির চেয়ার্যম্যন পদে কোনো পরিবর্তন আসছে কি— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকেই চান। ফলে এই পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে, সূত্রগুলো বলেছে, ডিসেম্বরে কাউন্সিল নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থাকলেও তা কাটিয়ে উঠেছে জাপা। এসব বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, জাতীয় পার্টির ৭৬টি জেলা কমিটির মধ্যে ৫৬ জেলার কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। বাকিগুলোতে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলেছে। এই অবস্থায় জাপার কেন্দ্রীয় কাউন্সিল চাচ্ছেন না অনেকেই। তবে দলের একটি অংশ আগামী ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করতে ইচ্ছুক।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, অনেক জেলায় জাপার কাউন্সিল হয়েছে ঠিকই, তবে সেসব জায়গায় এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া যায়নি। ঢাকা ও এর আশপাশের অনেক জেলাতেও কমিটি নেই। এর মধ্যে গাজীপুরের অবস্থা খুবই নাজুক। এ জেলায় দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে।
জাতীয় পার্টি জাতীয় পার্টির কাউন্সিল জাপা জাপা চেয়ারম্যান জাপা মহাসচিব জি এম কাদের মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ