‘বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়’
৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:২৩
ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ’১৯৯০ সালের আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তাদের সবাইকেই স্বৈরাচার নামে অভিহিত করা হয়েছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এই সংবিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা আমরা করতে পারছি না। আমরা সংসদীয় পদ্ধতির মূল স্পিরিট বা আসল ধারণা গ্রহণ করতে পারিনি।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী সভার সভাপতিত্ব করেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘সংবিধানের ৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বা বিবেচনার ওপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হবে, দলের বাইরে তারা যেতে পারে না। সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের আসল কেন্দ্রবিন্দু করা আমাদের সংবিধান অ্যালাও করে না এবং সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহিতা এটাও আমাদের সংবিধান অ্যালাও করে না। সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করতে পারে না।’
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু থাকেন। এই কারণে, আমাদের দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না উল্লেখ করে জাপা নেতা বলেন, ‘আর এ কারণেই আগে পিছে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। কিন্তু সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন শুধু একজনকে তিনি হচ্ছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অপবাদ দিয়েই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির ওপর চরম অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে।’
গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘যদি সংবিধানের ৭০ ধারা উঠিয়ে দেয়া হয় এবং এমপিরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে তাহলে সরকারের স্থায়ীত্ব কম হবে। এতে প্রতি মাসেও সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কোনো বিল পাস করতেও সমস্যা হবে সরকারের। এমন আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে আমরা পূর্ণ গণতন্ত্র চর্চার জন্য উপযুক্ত হতে পেরেছি কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় দেশে তুলনামূলক ভাবে বেশি সুশাসন বজায় ছিলো। জনগণের কল্যাণের কাজে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের তুলনা হয় না। এরশাদকে যারা স্বৈরাচার বলেন, তাদের লজ্জা করা উচিৎ কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তাদের সবাইকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছে যেতে হয়েছে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনসহ অন্যরা।