Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১২ তলা নতুন ভবন পাচ্ছে সুপ্রিমকোর্ট


১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:২৯

জোসনা জামান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সুপ্রিমকোর্টে নির্মাণ করা হচ্ছে ১২তলা একটি নতুন ভবন। এই ভবনের কাজ শেষ হলে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের মামলা কার্যক্রম পরিচালনায় গতি আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিচারকদের জন্য সহায়ক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছেন তারা।

‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট সম্প্রসারণে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ নতুন ১২ তলা ভবন নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৩৮ কোটি টাকা।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সুপ্রিমকোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। এটি একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি এবং হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারকদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহত হয়। বর্তমানে হাইকোর্ট ডিভিশনে মামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ফাইলগুলো মাটিতে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ফলে মূল্যবান ফাইল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি ফাইল খুঁজে পেতেও সমস্যা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত মামলার সংখ্যা বাড়ায় ভবিষ্যতে ফাইল ব্যবস্থাপনায় আরো সমস্যা তৈরি হতে পারে। বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে প্রধান বিচারপতিসহ ৯৩ জন বিচারপতি আছেন। বিচারপতিদের বেশির ভাগেরই নিজস্ব চেম্বার নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি চেম্বারে দুইজন বিচারপতি শেয়ার করছেন।

বর্তমানে বিচারকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৯৩টি এজলাসের বিপরীতে ৬২টি এজলাস থাকায় বিচারকাজ পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। অতিরিক্ত মামলাজট নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট ডিভিশনে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে আরো অধিক সংখ্যক বিচারপতি প্রয়োজন হবে। বর্তমান চেম্বার ও এজলাস স্বল্পতার কারণে সৃষ্ট সংকট আরো চরম আকার ধারণ করতে পারে। এই সংকট মোকাবেলায় সুপ্রিমকোর্ট সম্প্রসারণের জন্য ১২ তলা ভবন নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভবনটি নির্মাণ করা হলে অতিরিক্ত ৪০টি এজলাস এর সংস্থান হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল একটি সূত্র সারাবাংলাকে জানায়,আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের প্রস্তুতিও চূড়ান্ত হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে যৌথভাবে আইন ও বিচার বিভাগ এবং গনপূর্ত অধিদপ্তর।

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অংশ। এটি সৎ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ সমাজব্যবস্থা গঠন ও সমাজের বিশৃঙ্খলা নিরসনের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিচার ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন আবশ্যিক হয়ে পড়েছে। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বিচার বিভাগের কর্মপরিধিও বহুগুণ বেড়েছে। কিন্তু দেশের বিচার বিভাগ অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে প্রায়ই জনগনের  দ্রুত ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ১২ তলা ভবন নির্মাণ, ২ তলা সাব-স্টেশন ভবন নির্মাণ, ১৬০০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন সাব-স্টেশন ইক্যুইপমেন্ট, ২টি ৫০০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর এবং ৫৬০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ারকুলার স্থাপন হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সুপ্রিমকোর্টে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে প্রয়োজনীয় এজলাসসহ পর্যাপ্ত দাপ্তরিক কাজের স্থান সংকুলান হবে। একই সঙ্গে বিচারকাজ পরিচালনা গতিশীল হবে।

সারাবাংলা/জেজে/জেডএফ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর