শুরুতেই নির্ণয় করা গেলে ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব
৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:২০
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, ‘শুরুতেই রোগ নির্ণয় করা গেলে ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব।’ এ ছাড়া তিনি ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে স্ত্রিনিং অর্থাৎ লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই ক্যানসার নির্ণয়ের অপরিসীম গুরুত্বের কথা তুলে ধরে দেশব্যাপী স্ক্রিনিং কর্মসূচি সম্প্রসারণের আহবান জানান।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিএসএমএমইউ-এর শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত ক্যানসার স্ক্রিনিং বিষয়ে প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানসার ইপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘এই আয়োজনের ফলে ক্যানসার বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। শুরুতেই যদি ক্যানসারের লক্ষণ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া যায় তবে অনেক ক্ষেত্রেই ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা করাও অনেক সহজ হয়ে পড়ে। এক সময় মনে করা হতো ক্যানসার কখনোই নিরাময়যোগ্য না। ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে শুরু থেকে পদক্ষেপ নেওয়া গেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
আয়োজকদের তৈরি বিভিন্ন ক্যানসার স্ক্রিনিং সম্পর্কিত সুপারিশগুলো ভবিষ্যতে একটি গাইডলাইন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ইপিডেমিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
তিনি বলেন, ক্যানসার স্ক্রিনিং নিয়ে সম্মেলন হবে এটি ছিল একসময় স্বপ্ন দেখার মতো। আমরা শুরু করেছিলাম ৫০ জনকে নিয়ে আর এখন সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ১৭৫ জন এখানে উপস্থিত আছেন। শুধুমাত্র চিকিৎসকরাই নয়, ক্যানসার নিয়ে কাজ করে এমন সমাজসেবী থেকে শুরু করে অনেকেই আজ এখানে আছেন।
তিনি বলেন, ক্যান্সার স্ক্রিনিং কেনো প্রয়োজন তা নিয়ে আজ আলোচনা করা হবে। বিগত বছরগুলোতে সরকারি উদ্যোগে স্তনক্যানসার ও জরায়ুমুখ স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম অগ্রগতি লাভ করেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এই প্রোগ্রামের আওতায় এটি সম্প্রসারণ ও সম্পূর্ণ করতে মুখগহ্বরের ক্যানসার অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
এই স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম শুধুমাত্র হাসপাতালকেন্দ্রিক না থেকে সমাজভিত্তিক সুসংগঠিত কর্মসূচির ওপর জোর দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে টেলিকনফারেন্সে যোগ দেন সংসদ সদস্য ওয়াসেকা আয়েশা খান।
তিনি বলেন, গ্রামে এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করে তুলতে হবে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। আর এ জন্য ক্যানসার স্ক্রিনিং খুবই জরুরি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সাবেরা খাতুন।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাই, বিএসএমএমইউ-এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুল্লাহ শিকদারসহ সম্মেলনে স্তন ক্যানসার, জরায়ুমুখ ক্যানসার, মুখগহ্বর ক্যানসার, প্রোস্টেট ও বৃহদন্ত্রের ক্যানসারের প্রায় বিশটি বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপন করেন দেশের বিশেষজ্ঞ ও তরুণ চিকিৎসকরা। সম্মেলনে যোগ দেন প্রায় দুইশজন চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবকরা।