ডেঙ্গু: সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল
৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৫৮
ঢাকা: বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব পরিসংখ্যান। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে আগের সেই রেকর্ড। এর আগে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৯৩ জন রোগী মারা যান ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। সেই পরিসংখ্যান ছিল পুরো বছরের। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, এ বছরে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ১৩৩ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার এ তথ্য জানিয়েছেন।
আইইডিসিআরের প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৯ সালে ২৬৪ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য পেয়েছে ‘ডেথ রিভিউ কমিটি’। এর মধ্যে ২১১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৩৩ জন মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর। এই ১৩৩ জনের মধ্যে এপ্রিলে দু’জন, জুনে ছয় জন, জুলাইয়ে ৩৫ জন, আগস্টে ৭৪ জন, সেপ্টেম্বরে ১৩ জন ও অক্টোবরে ৩ জন মারা গেছেন।
২০০০ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সে বছর মারা গিয়েছিলেন ৯৩ জন। ২০০১ সালে ৪৪ ও ২০০২ সালে ৫৮ জন মৃত্যুবরণ করেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। এছাড়া ২০০৩ সালে ১০ জন, ২০০৪ সালে ১৩ জন, ২০০৫ সালে চার জন, ২০০৬ সালে ১১ জন মারা যান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানিয়েছেন, রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। সবমিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০১ জন। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৯২ জন এবং ঢাকা মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১০৯ জন।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এক লাখ ৭৪২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ১৭৭ জন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ৯৯ দশমিক ৪ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
রোগীর সংখ্যা কমে আসা বিষয়ে ডা. আয়শা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি বর্তমানে ঢাকায় তুলনামূলকভাবে ভালো বলা যায়। রোগীর সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। তবে ঢাকার বাইরের কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।’
আইইডিসিআর ডেঙ্গু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু স্বাস্থ্য অধিদফতর