Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি চলছে


১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:৫৫

ঢাকা: রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়। গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে মঙ্গলবার গাম্বিয়া তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করছে। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে গাম্বিয়ার পক্ষে বক্তব্য রাখছেন।

মামলার অভিযোগে গাম্বিয়া বলছে, মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী কথিত সাফাই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশটির রাখাইনে বসবাস করা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, যৌন সহিংয়সতাসহ একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছে এবং এখনও সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জাতিসংঘের অনুসন্ধানকারী দলের তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেহেতু গাম্বিয়া ও মিয়ানমার দুইটি রাষ্ট্রই জাতিসংঘের গণহত্যা সনদে সই করেছে। সেহেতু গণহত্যাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, গত ১১ অক্টোবর গাম্বিয়া এই বিষয়ে জানতে চেয়ে মিয়ানমারকে কূটনৈতিকপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার এর কোনো জবাব না দেয়ায় গাম্বিয়া জাতিসংঘের আর্ন্তজাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হয়।

আদলত কার্যক্রমের লাইভ স্ট্রিমিং

গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গত ১১ নভেম্বর আইসিজে’র কাছে মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। এই মামলা দায়েরে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) গাম্বিয়াকে সমর্থন জানিযেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, এই মামলা কতদিন ধরে চলতে পারে, তার নির্দিষ্ট কোনো দিন-ক্ষণ বলা যাচ্ছে না। তবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে মিয়ানমারের প্রতি আইসিজে’র অর্ন্তবর্তীকালিন কঠোর আদেশ প্রত্যাশা করছে আর্ন্তজাতিক বিশ্ব।

মিয়ানমার বিয়য়ক কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রি এক বার্তায় বলেন, আইসিজে আদালতে শুনানীতে অংশ নিতে এরই মধ্যে হেগে পৌছিছি। রাখাইনে ঘটে যাওয়া গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে কানাডা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। মিয়ানমারের ঘটানো এমন লজ্জাজনক বিষয়ের বিচার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ায় কানাডার সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ এবং একই সঙ্গে গর্ববোধ করছি’।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইসিজে আদালতের শুনানিতে বাংলাদেশ কোনো পক্ষ না। তবে গাম্বিয়াকে সাহায্য ও সহযোগিতা করতে এরই মধ্যে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল ঢাকা থেকে হেগে গিয়েছে।

অন্যদিকে, এই মামলার বিরুদ্ধে লড়তে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ, কূটনীতিকদের নিয়ে শক্তিশালী দল গঠন করেছে মিয়ানমার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত এক বার্তায় জানিয়েছে, গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে। প্রথমদিন গাম্বিয়া তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে। পরদিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মিয়ানমার বক্তব্য দিবে। তার পরদিন বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রথমার্ধে গাম্বিয়া মিয়ানমারের যুক্তি খণ্ডন করবে, দ্বিতীয়ার্ধে মিয়ানমার গাম্বিয়ার যুক্তি খণ্ডন করবে।

সূত্রগুলো জানাচ্ছে, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতর বিচারকের সংখ্যা ১৫ জন। এই মামলার শুনানি প্রত্যক বিচারকের উপস্থিতিতেই হবে। তিনদিনের টানা শুনানি শেষে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিবেন। অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পর তার বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আগামী চারমাসের (অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের তারিখের পরদিন থেকে) মধ্যে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার উভয়কেই জানাতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের লক্ষ্য করে অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগ উঠে। অভিযানের মুখে ১১ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। সে সময় মিয়ানমারের সেনাসদস্য, পুলিশ ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী রোহিঙ্গাদের নিধনে সরাসরি অংশ নিয়েছে বলে জাতিসংঘের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সালমান শাহ্‌ স্মরণে মিলাদ মাহফিল
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৩

নাফ নদীর মোহনায় ২ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৯

সম্পর্কিত খবর