‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস, তা সরকার ভুলে গেছে’
১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৭
ঢাকা: বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।
তিনি বলেন, কিসের জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি? কী আমাদের অর্জন? আজ আমাদের ভোটাধিকার নেই, বিচার ব্যবস্থা নেই, মানবাধিকার নেই। সব হারিয়ে ফেলেছি। জনগণের ওপর চলছে নির্যাতন। মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। জনগণ যে সকল ক্ষমতার উৎস, তা সরকার ভুলে গেছে। কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ আয়োজিত বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন- ‘জনগণকে যারা মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তারা ডাকাত’
ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তাই সরকার যতই দাম্ভিকতা দেখাক না কেন, আর্ন্তজাতিকভাবে কোনো মর্যাদা পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, সময় এসেছে পরিবর্তনের। দেশের নতুন প্রজন্ম পরিবর্তন চায়। আজ স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে। অথচ দেশ ও জাতির মুক্তির কথা বলা হচ্ছে না।
তরুণ প্রজন্মের ওপর ভরসা রাখছেন জানিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, আজ মানবাধিকারের দাবি করব কার কাছে? আমাদের সব নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আমারা বিদ্যা-বুদ্ধির পথ চলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। এখন ভরসা নতুন প্রজন্মের সহসের ওপর। কারণ তারা আজ জেগে উঠেছে, পরিবর্তন চাচ্ছে।
কোনো মামলায় আসামির জামিন পাওয়াকে মৌলিক অধিকার আখ্যা দিয়ে এই আইনজীবী বলেন, কোনো মামলায় জামিন পাওয়া ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য হবে। জামিন দেওয়ার বিষয়টি কোর্টের নিজস্ব বিষয়। কিন্তু বাস্তবে কাউকে গ্রেফতার করলেই তার জামিন অনিশ্চিত, বন্দিজীবন নিশ্চিত। তাকে পুলিশ রিমান্ডে সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। নির্যাতন চালাতেও কোনো অসুবিধা নেই। নির্যাতনে ফলে কারো জীবন গেলে সেটা তার দুর্ভাগ্য। এ বিষয়ে কাউকে দায়িত্ব নিতে হয় না। অথচ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে সেখানে আসামিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিও আসামির অধিকার। এ বিষয় সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশ, সেটিও উপক্ষো করা হচ্ছে।
ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, বর্তমান যুগে আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে মানবাধিকার হরণকারী সরকারের গর্ব করার কিছু থাকে না। নিশ্চই আমাদের সরকার তা পদে পদে অনুভব করছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা মিলু চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এছাড়া সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মো. মোফাজ্জেল করিমসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে ব্ক্তব্য রাখেন।