Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টাকার বিনিময়ে মাদক বিক্রেতাদের ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি


১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৫৬

ভৈরব: পুলিশের বিশেষ অভিযানের নামে ভৈরবে লাখ টাকার বিনিময়ে চিহ্নিত দুই মাদক বিক্রেতাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভৈরব শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে সারাবাংলা ডট নেটে সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা পুলিশ সুপরের নির্দেশে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুর রহমানকে প্রধান করে একসদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিষয়ে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, দুই মাদক বিক্রেতাকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে জেলা পুলিশ সুপার নির্দেশ দিয়েছেন। লিখিত আদেশ হাতে পেলে তিনি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেবেন ও প্রতিবেদন তৈরি করবেন। তবে কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।

কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসরুকুর রহমান খালেদ সারাবাংলাকে জানান, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ঘটনায় নিজের শঙ্কা জানিয়ে ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ভৈরব বাজারে ২৫টি ব্যাংক, কয়েকশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় । কিন্ত শহর ফাড়ির ইনচার্জ তিনি যদি নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেন তাহলে আমাদের নিরাপত্তার কি হবে?’

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পঞ্চবটি পুকুরপাড় এলাকায় একাধিক মাদক মামলার আসামি আলমের বাড়িতে অভিযান চালান এসআই সেলিম। সেখানে উপস্থিত আলম, সুমী, ফারুক, আলাদিন, আলিফ ও রোকনকে তল্লাশি করে পুলিশ। তবে তাদের কাছে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়নি।

পুলিশ তাদের আটক করতে চাইলে ১ লাখ টাকায় রফা হয়— সুমী ও আলমকে ছেড়ে দেওয়া হবে, বাকি চারজনকে ৩৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে। নগদ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এসআই সেলিম চারজনকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। সে সময় আলম ও সুমীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি টাকা আজ দুপুরে পরিশোধ করার কথা ছিল। তবে বিষয়টি জানাজানি হলে এসআই সেলিম তড়িঘড়ি করে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে তোলার প্রস্তুতি নেন বলে জানায় সূত্র।

এই ঘটনায় আতঙ্কিত বোধ করেন আলম ও সুমী। তারা পুরো ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। সুমী বলেন, ঘুষ নেওয়ার সময় কথা হয়েছিল আমাকে এবং আলমকে ছেড়ে দেওয়া হবে। বাকি চারজনকে ৩৪ ধারায় চালান দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী, রাতেই এসআই সেলিমকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কথা রাখেনি।

আলম বলেন, আমাদের কাছে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য ছিল না। যেহেতু আমরা আগে মাদক বিক্রি করতাম, তাই আমাদের গ্রেফতারের হুমকি দেয় পুলিশ।

তবে এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে রাজি হননি মো. সেলিম। নিজের ভুল হয়ে গেছে, ভবিষ্যতে আর হবে না জানিয়ে তিনি উৎকোচ দিয়ে সাংবাদিকদেরও ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা চালান।

টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া মাদক বিক্রেতা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর