Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া অত্যন্ত জরুরি’


১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:০৬

ঢাকা: বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা স্বাধীন না হলে বিচার বিভাগ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকেই যায়। এজন্য বিচার বিভাগ স্বাধীনতা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের এক যুগ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সাবেক জেলা জজ মাজদার হোসেন বলেন, ‘নানামুখী প্রতিকূলতার মাঝে আমরা যে প্রত্যাশায় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে স্বাক্ষর করেছিলাম তা হয়তো অনেকটাই কার্যকর হয়েছে। কিন্তু বিচারবিভাগ আর্থিকভাবে স্বাধীন না হলে এ পৃথকীকরণ অনেকটাই মূল্যহীন।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যে কোনো কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের উদ্দেশ্য থাকে তার বিরূদ্ধে যেন কোনো রায় না আসে। যদিও বিচারের ক্ষেত্রে ইনসাফ ও সদাচার জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ নির্বাহী বিভাগের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা রয়েছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা বলেন, ‘বর্তমানে বিচার বিভাগে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ও আদালতের অত্যন্ত জটিল ব্যবস্থাপনা বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হওয়ার অন্তরায়। নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ একত্রিত হয়ে গেলে সুশাসনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই বিচার বিভাগের বাস্তবিক পৃথকীকরণের জন্য কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। একই সাথে বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া খুব জরুরি।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগ বরাবরই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং সবসময়ই সব বিরোধী দল বিচার বিভাগ স্বাধীনতার কথা বলে। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের সুফল থেকে বঞ্ছিত হওয়ার অনেক কারণই রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের বিচারক নিয়োগের কোনো আইনও নেই, নীতিমালাও নেই। বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, নিম্ন বা উচ্চ আদালতে ওই ব্যক্তির অবশ্যই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, মেধা সম্পন্ন, সৎ ও সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক হতে হবে। একই সাথে বিচার বিভাগ তার নিজস্ব গতিতে যেন কাজ করতে পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। অপরদিকে সবসময়ই উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে ক্ষমতাসীন সরকার দলের আস্থাভাজন ও দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। এই যদি হয় বিচারক নিয়োগের অবস্থা, তাহলে সঠিক বিচার আসবে কি করে?’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বিচারক নিয়োগের স্বচ্ছতায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিচারের রায় পক্ষে আসলে বিচার বিভাগ স্বাধীন, আর বিপক্ষে আসলেই পরাধীন এটা সঠিক নয়। বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষায় সবার সচেতনতা প্রয়োজন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধায়নে একটি স্বাধীন সেক্রেটারিয়েট থাকা খুবই জরুরি এবং আশা করা যাচ্ছে নিকট সময়ে তা বাস্তবে পাওয়া যাবে। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও সংসদ এর মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বিচার বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাসন বিভাগে সম্পৃক্ত করা উচিত না। বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির মতামত প্রাধান্য পেলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্ব হয়। হয়তো বিচার বিভাগ হতে আমরা যতটা চাই ততটা পাই নাই কিন্তু স্বাধীনতার পর হতে বিচার বিভাগের অর্জন কম না।’

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিন বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানে মনিবের আনুগত্য নয় বরং আইনের আনুগত্য। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বার এবং বেঞ্চের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা করা প্রয়োজন। আমাদের চরিত্রে এবং অনুভূতিতে স্বাধীনতার বোধ থাকা প্রয়োজন, তাহলেই সত্যিকারের স্বাধীনতা আসবে।’

সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজকের দিনে বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকের এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়, বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে তুলতে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া।’

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান।

বিচার বিভাগ স্বাধীন বিচার বিভাগ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

সম্পর্কিত খবর